নিজেকে জিজ্ঞেস করি, কেন আমি বেঁচে আছি: আফগান স্কুলছাত্রী

আফগান

আফগানিস্তানে মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুললেও ক্লাসে ফিরেছে কেবল পুরুষ শিক্ষক ও ছেলে শিক্ষার্থীরা। তবে নারীদের ক্লাসে ফিরতে বলেনি তালেবান। এমতাবস্থায় নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন দেশটির নারী শিক্ষার্থীরা।

আফগানিস্তানের স্কুল পড়ুয়া এক মেয়ে শিক্ষার্থী বিবিসিকে বলেন, তার স্বপ্ন ছিল আইনজীবী হওয়া। কিন্তু এখন ভবিষ্যত নিয়ে খুবই শঙ্কায় আছেন।

তিনি বলেন, চারপাশে সবকিছুই অন্ধকার দেখাচ্ছে। প্রত্যেকদিন আমি ঘুম থেকে জাগ্রত হই এবং নিজেকে জিজ্ঞেস করি, কেন আমি এখনো বেঁচে আছি? আমার কী ঘরে অবস্থান করা উচিত? অথবা কারো জন্য অপেক্ষা করা, যিনি আমার ঘরের দড়জায় এসে নক করবেন এবং বলবে, আমি যেন তাকে বিবাহ করি? নারী হওয়ার উদ্দেশ্য কী এটাই?

এই স্কুল শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, আমার মা অশিক্ষিত ছিল, এবং আমার বাবা তাকে ক্রমাগত ধমক দিতো এবং বোকা বলে সম্বোধন করতো। আমার কন্যা মায়ের মতো হোক, এটা আমি চাই না।

১৬ বছর বয়সী আরেক স্কুল শিক্ষার্থী বলেন, এটি একটি দুঃখজনক দিন। আমি চিকিৎসক হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন বাতিল হয়ে গেছে। তারা (তালেবান) আমাদের আর স্কুলে যেতে দিবে বলে মনে হয় না। এমনকি যদি আবারও স্কুল খোলে, তবুও তারা চায় না নারীরা শিক্ষিত হোক।

এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে তালেবান ঘোষণা করেছে যে, নারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার অনুমতি পাবে। তবে পুরুষের সঙ্গে নয়, সম্পূন্ন আলাদা। নারীদের জন্য আলাদা ড্রেস কোডও থাকবে। কিন্তু আলাদা ক্লাস পরিচালনা করার মতো পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা আফগানিস্তানে নেই। যার কারণে অনেক নারী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন বলে শঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে নারীদের বাদ দেওয়া এটাও ইঙ্গিত করে যে, তাদেরকে পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়া হবে না।

২০০১ সালে তালেবানদের ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করার সময় আফগানিস্তানে নারী শিক্ষার হার ছিল প্রায় শূন্য। গত ২০ বছরে প্রাইমারি স্কুলে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৫ মিলিয়ন। সবমিলিয়ে নারী শিক্ষার হার বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ শতাংশে। কিন্তু এখন সেটি আবার হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।