কলকাতায় বেড়েছে বাংলাদেশিদের পদচারণা

ভারতে কোভিড পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। সেই সঙ্গে বাংলাদেশেও করোনা গ্রাফ নিম্মমুখী হচ্ছে রোজ। প্রতিবেশী দুটি দেশের মধ্যে প্রতিনিয়ত নানা কারণে দুই দেশের মানুষের মধ্যে যাতায়াত বহু পুরনো। কোভিডকালিন পুরো পরিস্থিতিই পাল্টে গিয়েছিল। প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কলকাতার হোটেল পাড়ায় নেমে এসেছিল শ্মশানের নীরবতা। তবে সম্প্রতি ভারত পর্যটন ভিসা চালু করায় আশার আলো ফুটে উঠেছে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

কলকাতার রফি আহমেদ কিদঁয় স্ট্রিট, মার্কুইজ স্ট্রিট, সদর স্ট্রিট সহ গোটা নিউমার্কেট এলাকার আবাসিক হোটেল, খাবারের দোকান, ছোট-বড় বিপনি বিতানসহ ওষুধের দোকান, পরিবহন সংস্থার ব্যবসা-বাণিজ্য পুরোটাই নির্ভর করে বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর।

করোনার কারণে ২০২০ সাল ১৭ মার্চ থেকে কার্যত বন্ধ হয়ে যায় ভারতে বাংলাদেশিদের পদচারণা; তখন থেকেই কার্যত ভেঙে পড়ে কলকাতায় বাংলাদেশি নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য।
তবে চলতি মাসে গত এক সপ্তাহ ধরে চিত্রটা পাল্টাতে শুরু করেছে; কলকাতায় বাংলাদেশি হোটেলপাড়ায় আবার ব্যস্ততা ফিরেছে। মুদ্রা বিনিময়ের কাউন্টারগুলোতেও দেখা মিলেছে বাংলাদেশি পর্যটকদের টাকা গুণতে।

কলকাতা থেকে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে ৩০টি বাস ঢাকার সাথে সরাসরি কিংবা কাটাপথে যাতায়াত করলেও করোনার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সব বাস চলাচল। তবে গত একসপ্তাহ ধরে দুটি বাসে সেই যাত্রী পরিবহনও শুরু হয়েছে। এতে আশার আলো দেখছেন পরিবহন ব্যবসায়ীরাও।

সোহাগ পরিবহন কলকাতার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জগবন্ধু সাহা জানালেন, আগে প্রতিদিনি গড়ে ৩০ থেকে ৩৫টি বাস চলতো দুই দেশের মধ্যে। পেট্টাপোল-বেনাপোল হয়ে যে পর্যটকরা যাতায়াত করতেন, তারাই মূলত এই বাস ব্যবহার করতেন। কোভিডের কারণে একটিও বাস চলেনি। কারণ দুই দেশের মধ্যে বিশেষ ভিসা ছাড়া সব ধরনের পর্যটক ভিসা বন্ধ ছিল।

সেটা এখন শুরু হয়েছে। ভারত সরকার বাংলাদেশি পর্যটকদের ভিসা দিচ্ছে তবে সেটা শুধু আকাশপথে, স্থলপথে নয়। তবে ভারতে প্রবেশ করার পর ওই যাত্রীরা ইচ্ছে করলে স্থলপথে ফিরতে পারছেন। তারাই এখন বাসে ফিরছেন। সে কারণে এখন মাত্র দুটি বাস কলকাতা থেকে সীমান্ত পর্যন্ত যাতায়ত করছে।

একই কথা জানিয়েছেন কলকাতার শ্যামলী পরিবহনের স্থানীয় কর্মকর্তা সুদীপ ঘোষও।
এদিকে খাবারের হোটেলগুলোতে এখন আগের চেয়ে বেশি বাংলাদেশি পর্যটক আসছেন বলে দাবি করেন কলকাতার দাওয়াত হোটেলের কর্ণধার মোহাম্মদ আসলাম। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে ৩৫ শতাংশ কাস্টমার বাংলাদেশি। যা একমাসে আগেও ছিল মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ। যারা বিশেষ ভিসা নিয়ে আসতেন; তারাই খেতে আসতেন। এখন পর্যটন ভিসা চালু হওয়া পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিদিন ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ১০ হাজারের বেশি পর্যটক যাতায়াত করেন। এর মধ্যে গড়ে বাংলাদেশ থেকেই ভারতে প্রবেশ করেন ছয় থেকে সাত হাজার মানুষ। করোনার কারণে সেই সংখ্যাটা শূন্যের কোঠায় নেমে গিয়েছিল।

এসএইচ-১১/২৫/২১ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)