দক্ষিণ কোরিয়ায় মাঙ্কিপক্স শনাক্ত, বিমানবন্দরে কঠোর নজরদারি

দক্ষিণ কোরিয়ায় বিরল সংক্রামক রোগ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রক ও প্রতিরোধ সংস্থা কিডিসিএ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বুধবার প্রথম রোগী নিশ্চিত হওয়ার পর সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে দেশটি। বিমানবন্দরে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ওপর কঠোর নজরদারি জোরদার করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

কোরিয়া ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সির (কেডিসিএ) তথ্য অনুসারে, মঙ্গলবার বিমানযোগে জার্মানি থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ করেন একজন কোরীয় নাগরিক।

পরদিন তার শরীরে মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। এরপর তাকে সরাসরি রাজধানী সিউল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব শহর বুসানের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং আইসোলেশনে রাখা হয়। ওই ফ্লাইটে তার পাশাপাশি বসা যাত্রীদের সংক্রমণ আছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

কোরীয় ওই নাগরিকের উপসর্গগুলোর মধ্যে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস জ্বর, গলাব্যথা, ক্লান্তি ও সারা শরীরে ক্ষত ছিল বলে জানানো হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই জানান, দেশে আসার দিন থেকেই এ উপসর্গগুলো শুরু হয়েছিল।

কেডিসিএর কমিশনার পেক কিয়ং-রান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পরীক্ষার ফল পাওয়া গেলেই মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে জাতীয়ভাবে কী কী ব্যবস্থা নেয়া হবে, তা রাষ্ট্রীয়ভাবে জানিয়ে দেয়া হবে।

মাঙ্কিপক্সের টিকা এমন লোকদের দেয়া হবে যারা এক্সপোজারের ঝুঁকিতে রয়েছেন বা উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন, যদি তারা এটি গ্রহণ করতে ইচ্ছুক হন।

পেক আরও বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশের ২১ দিনের মধ্যে লক্ষণগুলো দেখতে পেলে কেডিসিএ হটলাইনে ১৩৩৯ কল করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে। তিনি বলেন, কোরিয়ায় স্থানীয় ব্র্যান্ডের ৩ কোটি ৫০ লাখ ডোজ গুটিবসন্তের ভ্যাকসিন রয়েছে। এ ভ্যাকসিন মাঙ্কিপক্স থেকে সুরক্ষা প্রদান করে বলেও জানান তিনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সংক্রমণ থেকে উপসর্গের সূত্রপাত পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সের ইনকিউবেশন সময়কাল সাধারণত ৬ থেকে ১৩ দিন এবং এর মৃত্যুর হার তিন থেকে ছয় শতাংশ।

কেডিসিএর মতে, মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলোর মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা, ঠান্ডা লাগা, ক্লান্তি, কাশি, ফোলা লিম্ফ নোড এবং ব্রণ বা ফুসকুড়ি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। ইনকিউবেশন সময়কাল যোগাযোগের বিন্দু থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে।

মহামারির রূপ না নিলেও এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৪২টি দেশে মাঙ্কিপক্স রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত শনাক্ত ও সন্দেহভাজন মিলিয়ে ২ হাজারেরও বেশি রোগী পাওয়া গেছে।

শনাক্তের বেশির ভাগই ইউরোপ অঞ্চলের। মাঙ্কিপক্স পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোর একটি স্থানীয় রোগ। এ রোগ এখন আফ্রিকার বাইরেও শনাক্ত হচ্ছে। তাই রোগটি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

এসএইচ-২০/২২/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)