কোরীয় উপদ্বীপে ফের উত্তেজনা

কোরীয় উপদ্বীপে আবারও উত্তেজনা দেখে দিয়েছে। উত্তর কোরিয়া নতুন করে পরীক্ষামূলকভাবে আরও দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পরই দেশটির সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার উত্তেজনা শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে পিয়ংইয়ংকে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে সিউল।

কিছু দিন পরপরই দুই কোরিয়ার উত্তেজনা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমগুলোর শিরোনাম হয়। আর এ উত্তেজনা যেন সহজে প্রশমনের নয়।

আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, বুধবার প্রথম প্রহরে আরও দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, খুব সকালে সাউথ পিয়ংগান প্রদেশ অনচন থেকে ওয়েস্ট সি লক্ষ্য করে দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ শনাক্ত করা হয়েছে।

উত্তরের সবশেষ জোড়া ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ঘটনা দক্ষিণের সঙ্গে উত্তেজনা উসকে দেয়। প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে যৌথ সামরিক মহড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। পাশাপাশি পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কয়েক ঘণ্টা পরই এক বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়াকে আলোচনার আহ্বান জানান দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইওন সুক-ইওল। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আলোচনা শুধু দেখানোর জন্য নয়; বরং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হতে হবে।

বুধবার ছিল ইওন সুক-ইওলের দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার শততম দিন। এ উপলক্ষে বড় পরিসরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইওন সুক-ইওল উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। তবে নিজের বক্তব্যে পিয়ংইয়ংয়ের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়টি উল্লেখই করেননি তিনি।

ইওন সুক-ইওল বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এনপিটি তথা পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্বের জন্য অতি দরকারি।’

এর আগের দিনও মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিয়ে কথা বলেন তিনি। এদিন পিয়ংইয়ংকে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া যদি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে সম্মত হয়, তাহলে তার দেশ প্রতিবেশী দেশটিকে অর্থনৈতিক সহায়তা করবে।

চলতি বছরের শুরু থেকেই একের পর ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে চলেছে কিম জং উনের দেশ। জানুয়ারিতে দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয়। সবশেষ বুধবারও দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র করা হয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা আরও উন্নত করার লক্ষ্যে এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে। দ্য কোরিয়া হেরাল্ড জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া আবারও যেকোনো সময় বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে প্রস্তুত।

এদিকে দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি যৌথ সামরিক মহড়া চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ‘উলচি ফ্রিডম শিল্ড’ নামে মহড়াটি আগামী ২২ আগস্ট থেকে শুরু হবে। চলবে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

এসএইচ-২০/১৭/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)