আবারও পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি রাশিয়ার

ইউক্রেনে রাশিয়া অধিকৃত অঞ্চলগুলোর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে প্রয়োজনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ।

বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ইউক্রেনের কাছ থেকে দখল করা ভূখণ্ড ধরে রাখতে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র থেকে শুরু করে মস্কোর ভান্ডারে যত অস্ত্র আছে, তার সবই ব্যবহার করা হতে পারে। ইউক্রেন সংঘাতের শুরু থেকেই পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে আসছে মস্কো।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সাত মাসে গড়িয়েছে। এ লড়াইয়ে ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রুশ সেনারা। এর মধ্যে পূর্ব ইউক্রেনের দোনবাসের দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের পাশাপাশি বন্দরনগরী খেরসন ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চল উল্লেখযোগ্য।

রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দিতে গণভোটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত এসব অঞ্চলে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।

মূলত রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দিতে চাওয়া এ অঞ্চলগুলোর সুরক্ষার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘনিষ্ঠ রাজনীতিক মেদভেদেভ।

নিজের সবশেষ বক্তব্যে তিনি বলেন, রাশিয়ার দখল করা ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে মস্কোর মনোনীত কর্তৃপক্ষ রাশিয়ায় যোগ দিতে গণভোট আয়োজন করবে। পিছু হটার কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক প্রজাতন্ত্র ও অন্যান্য অঞ্চল রাশিয়াকে মেনে নেবে।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে খেরসন অঞ্চলে রাশিয়ার নিয়োগ দেয়া কর্মকর্তারা বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে খেরসনকে যুক্ত করা নিয়ে তারা গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিকে, রুশ পার্লামেন্টের স্পিকার বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে যদি খেরসনের জনগণ ভোট দেয়, তবে তিনি তা সমর্থন করবেন।

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর আগেই দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর) ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক (এলপিআর) নামে দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে দুটি প্রজাতন্ত্রেই গণভোটের আয়োজন করা হচ্ছে।

ইউক্রেনে রুশ অধিকৃত এই চার অঞ্চলের পরিকল্পনা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অঞ্চলগুলোর এ সিদ্ধান্ত ইউক্রেন সংঘাতের তীব্রতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা এই গণভোটের পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা বলেছেন, ‘রাশিয়া তাদের ইচ্ছেমতো যা খুশি করুক। নিজেদের ভূখণ্ড মুক্ত করার অধিকার ইউক্রেনের আছে এবং রাশিয়া যাই বলুক না কেন, আমরা সেগুলো মুক্ত করবই।’

এসএইচ-২৫/২২/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)