ইরানের নৈতিকতা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

FILE - Kurdish women activists hold headscarfs and a portrait of Iranian woman Mahsa Amini, with Arabic that reads, "The woman is life, don't kill the life," during a protest against her death in Iran, at Martyrs' Square in downtown Beirut, Sept. 21, 2022. The U.S. government has imposed sanctions on Iran’s morality police after the death in custody of a woman who'd been accused of wearing her Islamic headgear too loosely. (AP Photo/Bilal Hussein, File)

পুলিশি হেফাজতে তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় এবার ইরানের নৈতিকতা পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া হিজাব পরার শর্ত না মানায় সিএনএনের এক সাংবাদিকের সঙ্গে সাক্ষাৎকার বাতিল করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। খবর রয়টার্স।

সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, ইরানে নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে সপ্তম দিনেও উত্তাল ছিল ইরান। অনেক সরকারি ভবন এবং পুলিশ স্টেশনে আগুন লাগানোর খবর জানিয়েছে দেশটির সরকার। ৮০টিরও বেশি শহরে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এরই মধ্যে অনেককেই আটক করা হয়েছে। দেশজুড়ে বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট সেবা।

ইরানের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস ও গ্রিসের বিক্ষোভে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। এরই মধ্যে দেশটির নৈতিকতা পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন অর্থ দফতর। একই সঙ্গে ইরানের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন ইরানের গোয়েন্দা বিভাগের মন্ত্রী ঈসমাইল খতিব, বাসিজ বাহিনীর উপ-অধিনায়ক সালার আবনুশ, আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর উপ-অধিনায়ক কাসেম রেজাই, ওই বাহিনীর প্রাদেশিক বাহিনী মানুশের আমানুল্লাহি এবং ইরানি সেনার স্থলবাহিনীর কমান্ডার কিউমার্স হেইদারি।

মূলত ইরানের নৈতিক পুলিশপ্রধান মোহাম্মদ রোস্তামি চেশমেহ গাচি এবং তেহরানে এই বাহিনীর পরিচালক হাজ আহমেদ মিরজেইকে লক্ষ্য করে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ২২ বছর বয়সী ইরানি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদের পর মিরজেইকে অবশ্য সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

মার্কিন অর্থ দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই কর্মকর্তারা এমন সব সংগঠনের তদরকি করেন, যারা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের এবং ইরানের সুশীল সমাজের সদস্যদের, রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বীদের এবং ইরানের বাহাই সম্প্রদায়ের লোকজনকে দমন করতে নিয়মিত সহিংসতা চালিয়ে থাকে।

মার্কিন অর্থ দফতরের ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞার চূড়ান্ত লক্ষ্য শাস্তি দেয়া নয়; বরং তাদের আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসা।

এদিকে, হিজাব না পরায় সিএনএনের সাংবাদিক ক্রিশ্চিয়ান আমানপোরের সঙ্গে নিজের সাক্ষাৎকার বাতিল করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। মার্কিন গণমাধ্যমটির দাবি, শেষ মুহূর্তে ওই নারী সাংবাদিক হিজাব পরার শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানানোয় তা বাতিল হয়। যদিও বিবিসিসহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের দাবি, প্রেসিডেন্ট নয়, সাক্ষাৎকারটি বাতিল করেছেন খোদ সিএনএনের ওই সাংবাদিক।

গত সপ্তাহে ঠিকমতো হিজাব না পরার অভিযোগে মাহসা আমিনিকে গ্রেফতার করে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ। এরপর তার মৃত্যু হয়। তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে–এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তবে, ইরান কর্তৃপক্ষের দাবি, গ্রেফতার হওয়ার পর মাশা আমিনি ‘হৃদ্‌রোগে’ আক্রান্ত হয়ে কোমায় চলে যান এবং পরে তার মৃত্যু হয়।

এসএইচ-১৬/২৩/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)