শরণার্থী শিবিরে যৌন হয়রানির অভিযোগ

দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ পরিচালিত শরণার্থী শিবিরগুলোতে কর্মরত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি আল-জাজিরা প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। এতে আশ্রয় শিবিরে হয়রানির শিকার বেশ কয়েকজন শরণার্থীর ভয়াবহ অভিজ্ঞতাও তুলে ধরা হয়। এদিকে, আল-জারিরার ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর জরুরি ভিত্তিতে এ বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

দক্ষিণ সুদানের মালাকাল শরণার্থী শিবির। জাতিসংঘ পরিচালিত দেশটিতে সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির এটি। গৃহযুদ্ধে জীবন বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালানো হাজার হাজার বাসিন্দাকে আশ্রয় দিতে ২০১৩ সালে ক্যাম্পটির কার্যক্রম শুরু হয়। তবে, দু-বছর না যেতেই সেখানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে শরণার্থীদের যৌথ হয়রানির অভিযোগ ওঠে। এরপর সাত বছর পেরিয়ে গেলেও অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।

সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রকাশিত এক তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ক্যাম্পটিতে যৌন হয়রানির ভয়াবহ চিত্র। অভিযোগের আঙুল ক্যাম্পটিতে কর্মরত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মীদের দিকেই।

ক্যাম্পটিতে সরেজমিন ঘুরে বেশ কয়েকজন শরণার্থীর সঙ্গে কথা বলে ওই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা। এতে বলা হয়, মালাকাল শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া বহু শরণার্থীকে প্রায় নিয়মিতভাবে যৌন হয়রানি করে থাকেন উন্নয়ন সংস্থার কর্মীরা। যৌন হয়রানির বিষয়টি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকায় এ নিয়ে তারা কখনো মুখ খোলেন না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

শুধু তাই নয়, হয়রানির শিকার অনেকেই জানান, নানা ধরনের উপহার ও বাড়তি সহায়তার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান উন্নয়নকর্মীরা। সম্মতি না দিলে শরণার্থীদের সহায়তাও বন্ধ করে দেন তারা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যৌন হয়রানির বিষয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, যৌন হয়রানি বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এ ছাড়াও কী ধরনের আচরণ যৌন হয়রানির আওতায় পড়ে, তা শরণার্থীদের কাছেও তুলে ধরছেন তারা। অভিযোগ জানাতে হটলাইন নম্বর খোলা হয়েছে বলেও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘ পরিচালিত শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে উন্নয়ন সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠলেও সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ এ নিয়ে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংস্থাটি।

এসএইচ-১৮/২৩/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)