আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

সাবেক পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় অভিযোগ গঠনের পর আদালতে আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী মঙ্গলবার তিনি আত্মসমর্পণ করতে পারেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

গত বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে ম্যানহাটনের জেলা অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগের গ্র্যান্ড জুরি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন এবং ওই দিনই অভিযোগপত্রটি ট্রাম্পের কাছে হস্তান্তর করেন। তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আদালতে উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযোগগুলো প্রকাশ করা হবে না।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, মঙ্গলবার ট্রাম্প জেলা অ্যাটর্নির অফিসে রিপোর্ট করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তখন তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এমন একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলেছে, সোমবারই ফ্লোরিডা থেকে নিউইয়র্কে উড়ে যাবেন ট্রাম্প। এরপর ট্রাম্প টাওয়ারে রাত যাপন করবেন এবং পরদিন মঙ্গলবার আদালতে হাজিরা দেবেন।

এদিকে ম্যানহাটনের কর্মকর্তারা বলেছেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে মঙ্গলবার আদালতের আশপাশের রাস্তাগুলোতে সর্বসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ করা হবে। ট্রাম্প যতক্ষণ আদালতে থাকবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা সংস্থা ‘সিক্রেট সার্ভিস’ তাঁর সঙ্গে থাকবে।

তবে নিউইয়র্ক শহরের মেয়র এরিক অ্যাডামসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, শহরে সহিংসতার কোনো হুমকি নেই।

ট্রাম্পের আইনজীবী জো টাকোপিনা বলেছেন, এটি একটি নজিরবিহীন ও অন্যায্য মামলা। এই মামলায় তাঁর মক্কেলের (ট্রাম্প) আত্মপক্ষ সমর্থনের সম্ভাবনা শূন্য।

এদিকে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, মঙ্গলবার নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ম্যানহাটনের অপরাধ আদালতে মামলার শুনানি হবে। ওই দিন আত্মসমর্পণ করবেন ট্রাম্প। শুক্রবার টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি জানান ট্রাম্পের আইনজীবী জো টাকোপিনা।

অবৈধ সম্পদ ও যৌন সম্পর্ক নিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সাবেক পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে বিপুল অঙ্কের অর্থ ঘুষ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন স্টর্মি ড্যানিয়েলস। সেই অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তিনটি তদন্ত চলছে। এর মধ্যে নিউইয়র্কের তদন্তকারীরা গত বৃহস্পতিবার প্রথম তাঁদের সিদ্ধান্ত জানান।

স্টর্মি ড্যানিয়েলসের অভিযোগ, ২০০৬ সালের দিকে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক নিয়ে স্টর্মি যাতে মুখ না খোলেন, এ জন্য ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে ট্রাম্প তাঁকে বিপুল অঙ্কের ঘুষ দিয়েছিলেন। তবে ট্রাম্প নিজে তা দেননি, তাঁর সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেনের মাধ্যমে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন।

তবে এই ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি ট্রাম্প বরাবরই অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে করা হয়েছে।

স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মামলা ছাড়াও সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে নথি জালিয়াতিসংক্রান্ত অন্তত ৩০টি মামলা রয়েছে।

এসএ-২/০১/২৩ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)