ইসরায়েলি নৃশংসতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের রাজধানীতে ব্যাপক বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান বর্বর হামলার প্রতিবাদে পাকিস্তানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। রোববার (২৯ অক্টোবর) রাজধানী ইসলামাবাদে আয়োজিত এই বিক্ষোভে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।

এসময় তারা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং ইসরায়েলি নৃশংসতার নিন্দা জানান। সোমবার (৩০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে এবং ইসরায়েলি নৃশংসতার নিন্দা জানাতে রোববার হাজার হাজার মানুষ ইসলামাবাদের রাস্তায় নেমেছেন। জামায়াতে ইসলামী এবং মজলিস ওয়াহদাত-ই-মুসলিমীন (এমডব্লিউএম) ইসরায়েলের বর্বরতার মুখে ফিলিস্তিনিদের সাহসিকতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এদিন পৃথক সমাবেশের আয়োজন করে এবং এতেই হাজারো মানুষ অংশ নেন।

জামায়াতে ইসলামীর প্রধান সিরাজুল হক তার দলের আয়োজিত সমাবেশে দেওয়া ভাষণে গাজা ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের বোমা হামলার প্রতিবাদে ইসলামাবাদের দূতাবাস সড়কে রোববার এই সমাবেশ করে জামায়াত।

সমাবেশে সিরাজ বলেন, যতদিন আমেরিকা ইসরায়েলকে সমর্থন করবে ততদিন জামায়াতে ইসলামীও ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গাজার জনগণের পাশে থাকবে। এসময় তিনি গাজার সমর্থনে সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানান।

জামায়াতে ইসলামীর এই প্রধান বলেন, ইসরায়েল যে ফিলিস্তিনের জমি দখল করছে সেটি জাতিসংঘও স্বীকার করে নিয়েছে। তিনি বলেন, ইসলামী দেশগুলোর শাসকরা মুসলমানদের এই কষ্টের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা না করে ওয়াশিংটনের দিকে তাকিয়ে আছে।

পরে আগামী ১৯ নভেম্বর লাহোরে আবারও গাজার ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভের ঘোষণা দেন সিরাজুল হক। ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে লাহোরের সেই সমাবেশে ১০ লাখ পাকিস্তানি অংশগ্রহণ করবেন বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে গাজার ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে রোববার পৃথক সমাবেশের আয়োজন করে মজলিস ওয়াহদাত-ই-মুসলিমীন। এমডব্লিউএম প্রধান আল্লামা রাজা নাসির আব্বাস জাফরি ওই সমাবেশে বলেন, ইসরায়েল গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর বোমাবর্ষণ আরও জোরালো করেছে এবং তাদের স্থল বাহিনী অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে অভিযান আরও বাড়াচ্ছে।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, গোটা বিশ্ব নির্লজ্জভাবে ইসরায়েলের এই নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা দেখছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৫ জনে। নিহতদের মধ্যে ৩ হাজার ৩৪২ শিশু, ২ হাজার ৬২ জন নারী এবং ৪৬০ জন বয়স্ক মানুষ।

এছাড়া ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে। একইসঙ্গে গত ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধও আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল।

এসএ-০৮/১০/৩০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)