ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় চলমান অপরাধ ও ধ্বংসযজ্ঞের মূলহোতা হিসেবে আমেরিকাকে অভিযুক্ত করেছে ইরান। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শনিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত আরব ও মুসলিম নেতাদের এক জরুরি সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন।
এ সময় গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর চলমান নৃশংস অভিযানের কথা উল্লেখ করে দেশটির সামরিক বাহিনীকে একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ইরানি নেতা।
রাইসি বলেন, ‘ইসলামী সরকারগুলোর উচিত দখলদার ও আগ্রাসী সরকারের সেনাবাহিনীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা।’
গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় বর্বর হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল। গোটা বিশ্বের আহ্বান উপেক্ষা করেও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা অব্যাহত দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। এমন প্রেক্ষাপটে শনিবার জরুরি বৈঠক আহ্বান করে আরব লীগ ও অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুসারে, আল আকসা মসজিদের মর্যাদাহানি, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হামলার প্রতিবাদে গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলা চালায় গাজার প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। ওই দিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ইসরাইলের হামলায় ১২ হাজারের বেশি নিরীহ ফিলিস্তিনি প্রাণ হানিয়েছেন। যাদের একটা বড় অংশ নারী ও শিশু। তাছাড়া ইসরাইলি বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা।
অপরদিকে হামাসের হামলায় ১৪০০ ইসরাইলি নিহতের দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৪০ জনকে জিম্মি করেছে হামাসের যোদ্ধারা।
গত মার্চ মাসে ইরান এবং সৌদি আরব সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে সম্মত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো দেশটি সফরে গেলেন ইব্রাহিম রাইসি।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, জরুরি বৈঠকে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশগুলিকে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বানও জানান ইরানি প্রেসিডেন্ট। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের জন্য বৃহত্তর সমর্থনের আহ্বান জানান তিনি।
এ ছাড়া ইসলামিক দেশগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ‘জায়নবাদী শাসকের’ সাথে যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন রাইসি।
এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে জ্বালানি ক্ষেত্রে ইহুদিবাদী শাসকের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক বয়কটকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইসরাইলকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও অভিযুক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘জায়নবাদী (ইহুদিবাদী) শাসনের যুদ্ধাস্ত্র এবং এর জ্বালানি উভয়ই সরবরাহের সাথে আমেরিকানরা জড়িত।’
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘নিঃসন্দেহে মার্কিন সরকার এই অপরাধের কমান্ডার এবং প্রধান সহযোগী।’
এসএ-০৭/১১/১২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)