এশিয়ার উন্নত দেশ জাপানে এই প্রথমবার অভিবাসী শ্রমিকদের সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়েছে। বর্তমানে জাপানে কাজ করছেন প্রায় ২০ লাখ ৫০ হাজার বিদেশি শ্রমিক; কিন্তু তারপরও বিভিন্ন খাতে ব্যাপক শ্রমিক সংকটে ভুগছে দেশটি।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাপানের শ্রম মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শতকরা হিসেবে গত এক বছরে জাপানে অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ।
এই বিদেশী শ্রমিকদের ৫১ শতাংশ ভিয়েতনাম থেকে আসা। এছাড়া মিয়ানমার, নেপাল, ইন্দোনেশিয়ার অনেক শ্রমিকও কাজ করেন জাপানে।
পৃথক এক বিবৃতিতে জাপানের থিঙ্কট্যাংক সংস্থা তেইকোকু ডেটাব্যাংক জানিয়েছে, করোনা মহামারির পর থেকে আগের তুলনায় দেশটিতে বিদেশি শ্রমিকদের আগমনের হার খানিকটা হ্রাস পেয়েছে।
নিম্ন জন্মহার এবং গড় আয়ু বৃদ্ধির প্রভাবে ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর জাপানে কমছে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা। ফলে অভিবাসী শ্রমিকদের ওপরও দেশটির নির্ভরশীলতা বাড়ছে দিন দিন।
প্রতি বছরই জাপানে আসছেন বিদেশি শ্রমিকরা, কিন্তু তারপরও শ্রমিক ঘাটতি কাটছে না দেশটির। জাপানের অর্থনীতিবিদদের মতে, ২০৪০ সালের দিকে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে শ্রমিক ঘাটতি পৌঁছাবে ১ কোটি ১০ লাখে।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে জাপানের সবচেয়ে ভুক্তভোগী খাতটির নাম মাঝারি আকৃতির ব্যবসায়ীক উদ্যোগ। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শ্রমিক সংকট ও ব্যাংক ঋণের চাপে ব্যাপক মাত্রায় সংকুচিত হয়েছে এই খাতের অন্তত ৭৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধও হয়ে গেছে।
সব খাতের অবস্থা অবশ্য অতটা খারাপ নয়। যেমন, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে জাপানের ভবন নির্মাণ খাতের আকার বেড়েছে ২৪ শতাংশ। এই খাতের অধিকাংশ শ্রমিকই বিদেশি।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ মুহূর্তে দেশটির পণ্য প্রস্তুত (ম্যানুফেকচারিং) খাতে বিদেশি শ্রমিকদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এরপর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিভিন্ন পরিষেবা ও খুচরা শিল্প খাত।
একসময় জাপানে বিদেশি শ্রমিকদের কম মজুরি দেওয়ার দুর্নাম ছিল। কিন্তু সম্প্রতি টোকিও বিদেশি শ্রমিকনীতিতে পরিবর্তন এনেছে। বর্তমান শ্রমিকনীতিতে অদক্ষ বিদেশি শ্রমিকদেরও কাজের সুযোগ প্রদান কারা হচ্ছে, সেই সঙ্গে তাদের দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ।
বস্তুত, এই মুহূর্তে জাপান বিশ্বের মুষ্টিমেয় কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি, যেখানে অদক্ষ শ্রমিকদের সযোগ রয়েছে। তাই এশিয়ার অনেক দেশের শ্রমিকদের কাছে এই দেশিটি সবচেয়ে কাঙিক্ষত গন্তব্য।
সূত্র : ব্লুমবার্গ
এসএ-০৭/২৬/২৪(আন্তর্জাতিক ডেস্ক)