পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে জয়ী পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্রদের প্রায় সবাই সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে (এসআইসি) যোগ দিয়েছেন। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দেশটির নির্বাচন কমিশনে হলফনামা জমা দেওয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটিতে যোগ দেন তারা।
এর আগে জোট গঠনে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সাথে চুক্তি করেছিল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের প্রায় সব পিটিআই-সমর্থিত বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী বুধবার নির্বাচন কমিশনে হলফনামা জমা দিয়েছেন। আর এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে (এসআইসি) যোগদান করেছেন তারা।
দ্য ডন বলছে, সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে জয়ী জাতীয় পরিষদের ৮৯ জন এমএনএ, খাইবার পাখতুনখাওয়া অ্যাসেম্বলির ৮৫ জন, পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির ১০৬ জন এবং সিন্ধ অ্যাসেম্বলির ৯ জন সদস্য বুধবার নির্বাচন কমিশনে তাদের হলফনামা জমা দিয়েছেন।
মূলত হলফনামা জমা দেওয়ার মাধ্যমে পিটিআইয়ের সেই দাবির প্রমাণ মিলল যে তারা জাতীয় পরিষদের ৯৩টি আসন জিততে পেরেছে। অন্যদিকে ওমর আইয়ুব খান, ব্যারিস্টার গহর খান এবং আলী আমিন গন্ডাপুরসহ তিনজন দলীয় নেতা হলফনামা জমা দেননি। আর দাওয়ার কুন্দি নামে অন্য একজন প্রার্থীর নামে এখনও ইসিপির বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি।
দ্য ডন বলছে, ওমর আইয়ুব খান এবং ব্যারিস্টার গহর ইচ্ছাকৃতভাবে এসআইসি সদস্য হওয়ার জন্য হলফনামা জমা দেননি কারণ তারা পিটিআইয়ের আন্তঃদলীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা করছেন। আর আলী আমিন গন্ডাপুরও হলফনামা দাখিল করেননি, কারণ তিনি খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য পিটিআইয়ের প্রার্থী হিসাবে মনোনীত হয়েছেন।
পিটিআইয়ের বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, ওমর আইয়ুব এবং গহর খান ব্যতীত জাতীয় পরিষদের ও প্রাদেশিক পরিষদের পিটিআই সমর্থিত জয়ী সকল প্রার্থী এসআইসিতে যোগদান করেছেন। এমনকি জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত দুই সদস্য চৌধুরী ইলিয়াস এবং ব্রিগেডিয়ার (অবসরপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ আসলাম ঘুম্মান নিখোঁজ থাকলেও তাদের হলফনামাও ইসিপিতে জমা দেওয়া হয়েছে।
পিটিআইয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘আমরা আশা করি, জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সংরক্ষিত আসন থেকে আমরা আমাদের প্রাপ্য অংশ পাব।’
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সদ্য সমাপ্ত সাধারণ নির্বাচনে কোনও দলই সরকার গঠন করার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে ইমরান খানের প্রতিষ্ঠিত দল পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। যদিও এই দলটি তাদের নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে ভোটে অংশ নিতে পারেনি।
এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পেয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। আর তৃতীয় স্থানে আছে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।
নির্বাচনে কোনও দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় কয়েকদফা আলোচনার পর পিএমএল-এন ও পিপিপি জোটবদ্ধভাবে সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আর এটিকে ‘পিডিএম ২.০’ বলে অভিহিত করেছে পিটিআই। দলটি বলেছে, পিএমএল-এন এবং পিপিপি চুরি করা ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে এবং দেশের মানুষ ‘পিডিএম ২.০’-কে মেনে নেবে না।
এসএ-০৮/২২/২৪(আন্তর্জাতিক ডেস্ক)