বৃষ্টিতে বন্ধুর সাথে এক ছাতায়, তারপর…

বৃষ্টিতে বন্ধুর সাথে এক ছাতার নিচে বাড়ি ফিরছিলো এক নবম শ্রেণির ছাত্রী। ঘটনা পড়েছিলো শিক্ষকের চোখে। তিনি ভেবে নিয়েছিলেন একই শ্রেণিতে পড়ুয়া বন্ধুর সাথে ওই ছাত্রীর প্রেম জমেছে।

বিষয়টি সহজভাবে নিতে পারেননি তিনি। ঘটে গেছে লঙ্কাকাণ্ড। বেধড়ক পিটুনির পর দুই শিক্ষার্থীকেই ধরিয়ে দেয়া হয়েছে ছাড়পত্র।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার দিবাকরপুর পাকুরিয়ার জীবনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এই ঘটনা ঘটে।

এরপর থেকেই পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে ওই দুই শিক্ষার্থীর।

জানা গেছে, জয়পুরহাট পাঁচবিবি উপজেলার দিবাকরপুর পাকুরিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের জীবনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী আয়েশা সিদ্দীকা।

এই ছাত্রীর ভাষ্য, ২৩ জুলাই স্কুল শেষে কোচিংয়ে পড়ার পর বাড়ি ফিরছিলো সে। পথে বৃষ্টি নামে। এ সময় একই পথ দিয়ে ফিরছিলো সহপাঠী তানভীর।

ছাতা না থাকায় তানভীর তার ছাতার ছাতার নিতে চলে আসে।

পেছন থেকে এই দৃশ্য দেখেন তাদের বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শামসুল ইসলাম।

পর দিন বিদ্যালয়ে গেলে তাদের লাইব্রেরি কক্ষে ডেকে নেন শিক্ষক। তাদের চিরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিরস্কার করেন।

এক পর্যায়ে বেদম বেত্রাঘাত করেন ওই শিক্ষক। এরপর তাদের হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় ছাড়পত্র। বাড়ি ফিরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী।

প্রতিবেশীরা বলেন, হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান আয়েশা। তাকে মানুষ করতে বাবা ও মা দুজনই ঢাকায় গার্মেন্টেসে চাকরি করে।

দাদির কাছে থেকে পড়ালেখা করছিলো সে। শিক্ষকের সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণে তার পড়ালেখা এখন বন্ধ।

লোকলজ্জায় বাড়ি থেকে বেরও হতে পারছেনা সে। একেবারেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে এই শিক্ষার্থী। তাছাড়া আশে পাশে বিদ্যালয় না থাকায় তার পড়ালেখার পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে।’

ওই দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের দায় ত্বিকার করেছেন শিক্ষক শামসুল ইসলাম। তিনি দাবি করেন, তারা খারাপ কাজ করেছে। অভিভাবক হিসেবে শাসন করেছি মাত্র।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মীর মিজানুর রহমানের দাবি, ওই দুই শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছিলো। পরে তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়।

তবে এমন ঘটনা তার জানা নেই বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ্ । লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।

বিএ-০৫/২৩-০৮ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)