পেঁয়াজের কেজি ২ টাকা!

ক্রেতা সংকটে হিলির আড়তে পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ। কম দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এতে তাদের লোকসান ‍গুণতে হচ্ছে।

২৯ মার্চের আগে কেনা পেঁয়াজ এখনও আড়তগুলোতে বিক্রি হওয়ার অপেক্ষায়। এদিকে পেঁয়াজ দিয়ে ঝরছে দুর্গন্ধযুক্ত পানি।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, ২৯ মার্চ পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি (আইপি) বন্ধ হওয়ার কথা। তাই ব্যবসায়ীরা চাহিদার তুলনায় বেশি পেঁয়াজ আমদানি করেন। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির পর তা বন্দর থেকেই বিক্রি করা হয়। তবে বন্দরে ক্রেতা সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ গুদামে রেখে দেন। এসব পেঁয়াজ দীর্ঘ দিনেও বিক্রি না হওয়ায় অতিরিক্ত গরমে গুদামেই পচে নষ্ট হচ্ছে।

মঙ্গলবার বন্দরের আড়তগুলোতে সরেজমিনে দেখা যায়, গুদামে সাজিয়ে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দুর্গন্ধযুক্ত পানি ঝরছে। এতে চারদিকে গন্ধ ছড়াচ্ছে। আড়তগুলোর সামনে ফেলে রাখা হয়েছে পচা পেঁয়াজ। প্রতি বস্তা পেঁয়াজ ৫০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার কোনো কোনো বস্তা বিনামূল্যেই দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে কয়েকজন আড়তদার বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে পেঁয়াজ পচে যাচ্ছে। প্রতিবার পেঁয়াজ পচলেও বিক্রি হয়ে যায়। তবে এবার পেঁয়াজ পচে গেছে শুনে কেউ কিনতে চাচ্ছেন না।

আরেকজন আড়তদার বলেন, অন্যান্য বারের মতো এবারও একই অবস্থা। কম বেশি সব বস্তায় পচন ধরেছে। প্রতিটি ৫০ কেজির বস্তা থেকে ১৫ থেকে ২০ কেজি ভালো পেঁয়াজ বের হয়। ভালো মানের পেঁয়াজগুলো ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। একটু পচা পেঁয়াজ ২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আবার অনেকেই বিনামূল্যেই পেঁয়াজের বস্তা দিয়ে দিচ্ছেন।

এদিকে কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পেরে খুশি পাইকারসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। ক্রেতারা বলেন, পেঁয়াজের আড়ত থেকে ১০০ টাকা দিয়ে ২ বস্তা পেঁয়াজ কিনলাম। এগুলো বাড়িতে নিয়ে বাছাই করে রোদে শুকাবো।

অতিরিক্ত পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে আমদানিকারকেরা বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল, ২৯ মার্চ থেকে নতুন করে আর আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে না। এ শঙ্কায় আগেই বন্দর দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। চাহিদার ‍তুলনায় পেঁয়াজ আমদানি বেশি হওয়ায় ক্রেতা সংকট দেখা দেয়। এদিকে গেল ৭ দিনেও পেঁয়াজ বিক্রি না হওয়ায় অতিরিক্ত গরমে পেঁয়াজ পচে যাচ্ছে। এসব পেঁয়াজ ভারত থেকে ২০ থেকে ২২ টাকা দরে কেনা হয়েছিল। কিন্তু এখন তা কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে অনেকেরই লোকসান গুণতে হবে।

হিলি বন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, পুরো মার্চ জুড়ে পেঁয়াজের আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। সবশেষ ২৯ মার্চ বন্দরে ভারতীয় ৬৩ ট্রাকে এক হাজার ৬৯০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

এসএইচ-২৫/০৫/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)