ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বাহাত্তরের সংবিধানকে বারবার কাটাছেঁড়া করে অকার্যকর একটা সংবিধানে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালে এ দেশের মানুষ যে সংবিধান রচনা করেছিলেন, সেটাকে বারবার কাটাছেঁড়া করে অকার্যকর একটা সংবিধানে পরিণত করেছে সরকার। তারা যখনই সুযোগ পেয়েছে সংবিধানকে ধ্বংস করেছে। দেশের অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।’ সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে জনগণের পকেট কাটছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
শুক্রবার সিলেট মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে এ সম্মেলন শুরু হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকারের অপকীর্তি বলে শেষ করা যাবে না। একটা ভালো কাজও দেখাতে পারবেন না। সবচেয়ে ভয়াবহ যে কাজ তারা করেছে, তারা এই বাংলাদেশের সমাজকে পুরোপুরি বিভক্ত করে ফেলেছে এবং একটা দূষিত সমাজে পরিণত করেছে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন দিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সিলেটের এই কাউন্সিল সাধারণ কাউন্সিল নয়। এই সিলেট থেকেই খালেদা জিয়া আন্দোলন ও নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতেন। তাই জনগণকে মুক্তির আন্দোলন সিলেট থেকে শুরু করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে, বেআইনিভাবে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। এর আগে তাকে কারান্তরীণ করে রাখা হয়েছিল চার বছর।’ তিনি বলেন, ‘এই সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন সারা বাংলাদেশে ভয়াবহ রকমের নির্যাতন-নিপীড়নের সময় চলছে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে। আন্দোলনে আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মী রাজপথে প্রাণ দিয়েছেন। শত শত নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। হাজারো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারপরও তারা কী পেরেছে আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতে, পারেনি। আজকে আরও দুর্বার গতিতে মানুষ জেগে উঠেছে এবং জেগে উঠেছে একটিমাত্র লক্ষ্যে, যেভাবেই হোক এই দানবীয় সরকার, যারা আমাদের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছে, তাদের পরাজিত করতে হবে। তাদের বিতাড়িত করতে হবে; পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে। এমনভাবে ধ্বংস করেছে, যেটাকে টেনে তোলা অত্যন্ত কঠিন। আজকে শুধু নিজেদের স্বার্থে, দুর্নীতির স্বার্থে, চুরি করার স্বার্থে তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে। তারা অনেক বড় বড় কথা বলে, তারা নাকি অনেক উন্নয়ন করেছে। এই উন্নয়নটা কার জন্য। এই উন্নয়ন গুটিকতক মানুষের জন্য। তারা পাতাল রেল করছে, মেট্রোরেল করেছে, কত টাকা খরচ হয়েছে। যা খরচ হওয়ার কথা তার চেয়ে তিনগুণ খরচ করেছে। পদ্মা সেতু করে খুব বাহবা নেয় তারা। সেই পদ্মা সেতু বানাতে ১০ হাজার কোটি টাকা ছিল বাজেট, তার প্রকল্প, যেটা আমাদের সময় করা হয়েছিল ১০ হাজার কোটি টাকার মতো। সেটা আজকে ৩০ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।’
এআর-০২/১০/০৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক)