নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় বাড়িতে ঢুকে মো. জুলহাস মিয়া (২৮) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অপর চারজন। নিহত যুবক জুলহাসের মামা এ অভিযোগ করেন।
শনিবার ঈদের দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উপজেলার চরাঞ্চল নীলক্ষা ইউনিয়নের বীরগাঁও পূর্ব পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জুলহাস মিয়া পোলট্রি ফার্মের ব্যবসায়ী। তিনি বীরগাঁও পূর্ব পাড়া গ্রামের শামসুল মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ চারজন হলেন সাদ্দাম মিয়া (৩২), ইয়ামিন মিয়া (১৮), হাবিব মিয়া (১৬) ও রাইজুদ্দীন মিয়া (২৬)। তাঁরা সবাই একই গ্রামের বাসিন্দা।
নিহত জুলহাসের মামা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এমন তুচ্ছ বিষয়ে টেঁটা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালাবে, বাড়িতে ঢুকে গুলি করে দেবে, ভাবতেই পারছি না। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই জুলহাসের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকার পথে থাকা দুজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জালাল মিয়া নামের এক ব্যক্তি ককটেলের মতো নানা ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য তৈরির সঙ্গে জড়িত। তিনি প্রায়ই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করেন। ঈদের দিন বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁর নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জন এলাকায় ককটেল ফাটাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থলের পাশেই জুলহাসের পোলট্রি ফার্ম। সেখানে জুলহাসসহ প্রায় ২০ জন আড্ডা দিচ্ছিলেন। জুলহাস এগিয়ে গিয়ে জালাল মিয়াকে অনুরোধ করে বলেন, মুরগিগুলো ভয় পায়, তাই এখানে যেন আর ককটেল না ফাটান। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এতে জালালসহ তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন চলে যান। প্রায় ৩০ মিনিট পর তাঁরা কিছু টেঁটা, পাইপগান ও শটগান নিয়ে আসেন। এ দৃশ্যে ভীত হয়ে জুলহাসসহ অন্যরা জুলহাসদের বাড়িতে ঢোকেন। জালালের নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জন বাড়িতে ঢুকে তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকেন। এতে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁরা চলে গেলে গুলিবিদ্ধ জুলহাস, হাবিব ও ইয়ামিনকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে জুলহাস মারা যান। গুলিবিদ্ধ অন্য দুজনকে নরসিংদী শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রায়পুরা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সত্যজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। ওই যুবকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এআর-০৭/২২/০৪ (আঞ্চলিক ডেস্ক)