বছরের প্রথম ছয় মাসে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৩৮৯ শ্রমিকের মৃত্যু

চলতি বছরের শুরু থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ছয় মাসে সারাদেশে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ৩৮৯ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এবার সবচেয়ে বেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে পরিবহন খাতে। এর পরেই রয়েছে নির্মাণ খাত। বেসরকারি সংস্থা সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটির (এসআরএস) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। রোববার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কর্মক্ষেত্রে সারা দেশে ২৮৭টি দুর্ঘটনায় ৩৮৯ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে দেশে ২৪১টি কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৩৩৩ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।

১৫টি জাতীয় ও ১১টি স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে এসআরএস এই প্রতিবেদন তৈরি করে।

এসআরএসের নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী বলেন, পরিবহন, নির্মাণ, উৎপাদন ও সেবা খাতে দুর্ঘটনা বেশি ঘটেছে। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে মালিকদের অবহেলা এবং সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর যথাযথ পরিদর্শনের ঘাটতি কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।

কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। না হলে দুর্ঘটনা বাড়তেই থাকবে বলে মনে করেন সেকেন্দার আলী।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন পরিবহন খাতে, ১২৮ জন। নির্মাণ খাতে মারা যান ৮৬ জন। এর পরেই রয়েছে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গ্যাস, বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। এই খাতে ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। কলকারখানা ও অন্যান্য উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানে ৫০ জন মারা যান। এ ছাড়া কৃষি খাতে প্রাণ গেছে ৬২ জনের।

মৃত্যুর কারণ পর্যালোচনা করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭৩ জন, বিস্ফোরণে ৫০ জন, বজ্রপাতে ৪০ জন, মাচা বা ওপর থেকে পড়ে ৩২ জন মারা গেছেন। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩০ জন, শক্ত বা ভারী কোনো বস্তুর আঘাত বা তার নিচে চাপা পড়ে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাসায়নিক দ্রব্য, সেপটিক ট্যাংক বা পানির ট্যাংকের বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে ১২ জন, আগুনে পুড়ে আটজন মারা গেছেন।

খাতভিত্তিক দুর্ঘটনার কারণ বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, অনিয়ন্ত্রিত পরিবহনব্যবস্থা, আইন প্রয়োগে বাধা, বেপরোয়া যান চলাচল ও অদক্ষ চালক ইত্যাদি পরিবহন দুর্ঘটনার মূল কারণ। রাসায়নিক পদার্থ সংরক্ষণে অদক্ষতা ও অবহেলা, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকা, কারখানা ভবনে জরুরি বহির্গমন পথ না থাকা ও বহির্গমন পথ তালাবদ্ধ করে দেওয়াও এ ধরনের মৃত্যুর কারণ।

এআর-০২/০৩/০৭ (ন্যাশনাল ডেস্ক)