সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে টাঙ্গুয়ার হাওরে একটি পর্যটকবাহী নৌকা থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ৩১ জনসহ ৩৪ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের আটকের পর পুলিশ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়েরকৃত মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (৩১ জুলাই) তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বুয়েটের শিক্ষার্থী ৩১ জন, বাকিরা অন্য স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী।
ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা নির্জন টাঙ্গুয়ার হাওরকে গোপন বৈঠকের স্থান হিসেবে বেছে নেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার (৩০ জুলাই) বিকেল ৪টায় তাহিরপুরের উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন নতুন বাজার (ডাম্পের বাজার) পাটলাই নদী দিয়ে টেকেরঘাট পর্যটন এলাকায় যাওয়ার পথে তাদের নৌকাসহ আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেলে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, তাহিরপুরের বাজারের নৌকা ঘাট থেকে রোববার সকাল ৭টায় একটি নৌকায় করে বুয়েটের ৩১ জনসহ ৩৪ শিক্ষার্থী টাঙ্গুয়ার হাওরের ঘুরতে যান। টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘোরাঘুরির পর দুপুরে পাটলাই নদী দিয়ে টেকেরঘাট পর্যটন এলাকায় যাওয়ার পথে তাহিরপুরের নতুন বাজারের সামনে নৌকা পৌঁছালে পুলিশের দুটি স্পিডবোট পর্যটকবাহী নৌকাটি থামিয়ে চালক আহাদুল মিয়া, মুহাদ্দিস মিয়াসহ বুয়েটের ৩৪ শিক্ষার্থীসহ মোট ৩৬ জনকে আটক করে তাহিরপুর থানায় নেওয়া হয়। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় আটক হওয়া শিক্ষার্থীরা থানা হেফাজত থেকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়।
তাহিরপুর নৌকা মালিক সমিতির সভাপতি শাহিনুর তালুকদার বলেন, রোববার বিকেল থেকে নৌকার দুইজন চালক, বুয়েটের ৩১ জনসহ ৩৪ শিক্ষার্থীসহ মোট ৩৬ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে। কী কারণে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে, তা জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি পুলিশ ও থানার ওসি।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস বলেন, ৩৪ পর্যটককে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়েছে। নাশকতার সন্দেহে কী তাদের আটক করা হয়েছে? বিষয়টি নিয়ে আমরা যাচাই-বাছাই করছি। পরে জানানো হবে।
তাহিরপুর থানা পুলিশ জানায়, গোপন ষড়যন্ত্র এবং ধর্মীয় জিহাদ সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার একটি বৈঠক চলে টাঙ্গুয়ার হাওরে ভাড়া করা নৌকায়। পরে পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দুটি স্পিডবোট পর্যটকবাহী নৌকাটি থামিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে আজ বিকেলে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ (সংশোধনী ২০১৩) বিভিন্ন ধারায় তাহিরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল কবীর বাদী হয়ে আটকদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
এআর-০৩/৩১/০৭ (আঞ্চলিক ডেস্ক)