বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দল, তার সমর্থক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের স্বার্থে একটি শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে প্রেস নোট দিয়েছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) সংস্থাটির মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকে এ প্রেস নোটটি প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিরোধীদলগুলোর বেশ কয়েকটি সমাবেশে সহিংস হামলা দেখা গেছে। সমাবেশগুলোতে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করেছে। পুলিশের পাশাপাশি কিছু সাধারণ পোশাকধারীদেরও বিক্ষোভকারীদের মারতে হাতুড়ি, লাঠি, ব্যাট এবং লোহার রড ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এসব সংঘর্ষে অনেক বিরোধীদলীয় সমর্থক ও কিছু পুলিশ আহত হয়েছেন। বিরোধীদলের সিনিয়র নেতাদের প্রকাশ্য দিবালোকে মারধর করা হয়েছে। আবার আইন-প্রয়োগকারী সংগঠনের সদস্য পরিচয়ে তাদের বাড়িতে অভিযানও চালানো হয়েছে। এসব সমাবেশের আগে ও সমাবেশের সময় বিরোধীদলের শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই মানবাধিকারের প্রতি তাদের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে এবং জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। তৃতীয় কোনো পক্ষ যাতে এসব অধিকার চর্চার প্রচেষ্টাকে দমিয়ে দিতে না পারে, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। আমরা পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন শুধু যেখানে অত্যন্ত প্রয়োজন সেখানেই বল প্রয়োগ করেন। আর সেক্ষেত্রেও এই বল প্রয়োগ হতে হবে বৈধ, সংযমের সঙ্গে এবং সংশ্লিষ্ট নীতি অনুসারে।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই যেন আগামী বছরের নির্বাচনের আগে যারা রাজনৈতিক প্রচার শুরু করেছেন তাদের সবার জন্য একটি নিরাপদ এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়। তাদের মৌলিক অধিকার এবং স্বাধীনতার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে রাজনৈতিক বহুত্ব এবং ভিন্ন মতামত প্রকাশকে সম্মান জানাতে হবে।
এর আগে সোমবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশের আন্দোলন-গ্রেপ্তার নিয়ে কথা বলেন সভা-সমাবেশের অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ক্লেমো ভউল।
এক টুইটার (এক্স) পোস্টে তিনি বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বিরোধী মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি।’
টুইটে হ্যাশট্যাগ বাংলাদেশ লিখে ক্লেমো ভউল লেখেন, ‘চলমান বিক্ষোভ সমাবেশে সংঘাত ও গ্রেপ্তারের মাত্রা বাড়ছে। এ অবস্থায় সব পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার টুইটে আরও বলেন, ‘দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোকে বলব, তারা যেন সভা-সমাবেশের অধিকার নিশ্চিতে কাজ করে এবং বাড়তি বাহিনী মোতায়েন না করে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বিরোধীমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি।’
বাংলাদেশের পতাকার একটি চিত্রজুড়ে দিয়ে টুইট করেন জাতিসংঘের এই বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার।
এআর-০৩/০৪/০৮ (জাতীয় ডেস্ক)