সাঈদীর গায়েবানা জানাজার অনুমতি দেওয়া হবে না: ডিএমপি কমিশনার

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে জামায়াত-শিবিরের তান্ডব চালিয়েছে। এ কারণে বুধবার (১৬ আগস্ট) ঢাকায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজার নামাজের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু এবং তৎপরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত বিষয় তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, সোমবার গভীর রাতে জামায়াতের কয়েক হাজার নেতাকর্মী শাহবাগ চত্বর ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরো হয়েছিল। তারা দাবি করে জানাজার পর মরদেহ নিয়ে যাবে। এর জবাবে আমরা বলি, ঠিক আছে। এখানে জানাজা পড়তে পারেন এবং মরদেহ নিয়ে যেতে পারেন। কারণ ভোর থেকে জাতীয় শোক দিবসের প্রোগ্রাম রয়েছে, পুলিশের ব্যস্ততাও রয়েছে।

খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, রাত দুইটা/সোয়া দুইটার দিকে জানাজা নামাজ না পড়ে মোনাজাত করেন তারা। আধা ঘণ্টা মোনাজাত করেন। তারা এতরাতে জানাজা নামাজ না পড়ে মোনাজাতের কথা জানান। এরপর মরদেহবাহী আ্যম্বুলেন্স যখন পিরোজপুর নেওয়ার জন্য বের হয়, তখন হাজার হাজার নেতাকর্মী গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। তার মরদেহ পিরোজপুর নিয়ে যেতে দেবেন না। এ সময় পুলিশ অফিসার ও মরদেহবাহী গাড়ির সঙ্গে যারা ছিলেন তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে এবং গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। রমনার ডিসি ও প্রটেকশন বিভাগের ডিসিসহ কয়েকজন সিনিয়র অফিসার আহত হন।

ঢাকার পুলিশ প্রধান আরও বলেন, পুলিশের চার-পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। দুটি মোটরসাইকেলকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আমরা অসীম ধৈর্য সহকারে তাদের তাণ্ডব সহ্য করি। যাতে একটা মরদেহ নিয়ে যেতে চাচ্ছে, নিয়ে যাক। তারপরেও আমরা কোনো শক্তি প্রয়োগ করিনি। কিন্তু ফজরের নামাজের পরে তাদের আবারও জানাজার নামাজের অনুমতি দেওয়া হলো। কিন্তু তারা ফজরের নামাজের পরে পুলিশ অফিসারদের পিজি থেকে বের করে দিয়ে হাসপাতাল দখল করে নিলো। তারা কোনোভাবেই মরদেহ পিরোজপুর নিতে দেবেন না।

‌‘এরপর ফেসবুক তারা প্রচার শুরু করলো সারাদেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের শাহবাগে জরো হওয়ার জন্য। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাধ্য হয়ে অত্যন্ত সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগ করি। আমরা কিছু টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করি। এরপর সাঈদীর মরদেহ পিরোজপুর পাঠানোর ব্যবস্থা করি। কারণ হাসপাতালে অনেক রোগী ছিল, এজন্য পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে।’

ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশের ওপর হামলা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অবনতির আশঙ্কায় ঢাকায় গায়েবানা জানাজার নামাজের অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও উল্লেখ করেন ডিএমপি কমিশনার।

এআর-০২/১৫/০৮ (ন্যাশনাল ডেস্ক)