অনেক ঝড়ঝাপটা পেরিয়ে মানুষের বাংলাদেশের জনগণের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা আমাদের গর্বের সেতু, একটা সিদ্ধান্ত বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বদলে দিয়েছে। অনেক ঝড়-ঝাপটা পার করে বাংলাদেশের জনগণের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে হয়েছে। সাধারণত কোনো প্রকল্প শেষ হলে সেই প্রকল্প শেষ হওয়ার অনুষ্ঠান হয় না। কখনো করা হয় না, শেষ হয়ে যায়।
শুক্রবার বিকেলে পদ্মা সেতুর মাওয়াপ্রান্তে পদ্মা সেতুর প্রকল্পের সমাপনী উপলক্ষে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সেতু নির্মাণে যারা যুক্ত ছিলেন, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। যারা বেচে নেই আমি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। যারা এখানে জমি দিয়েছেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাই। সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানানোর অনুষ্ঠান।
তিনি বলেন, যখন ক্ষমতায় ছিলাম না, বিদেশে গেলে বাংলাদেশের নাম শুনলে কেউ জিজ্ঞেস করতো, এটা কি ভারতের কোনো অংশ? বলতো, এই দেশ তো শুধু ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, দুর্ভিক্ষ লেগে থাকে। মিসকিন হিসেবে আমাদের বিবেচনা করা হতো। যেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট ও ব্যথার ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আর সেই স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের মর্যাদা থাকবে না, আমরা মাথা তুলে কথা বলতে পারবো না, আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ থাকবে না, এটা কি ধরনের বাংলাদেশ? যে জাতি রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করলো, সে জাতি কেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে না।
সরকারপ্রধান বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বের ধারণা পাল্টে দিয়েছে। আগে যারা কথায় কথায় খবরদারি করতো পদ্মা সেতু নির্মাণের পর তাদের মানসিকতা বদলে গেছে। এই সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জন্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রিতে বাধ সাধায় ২০০১ সালে সরকার গঠন করতে পারিনি। ওই সময় অনেক ভোট পেয়েছিলাম, কিন্তু প্রয়োজনীয় সিট পাইনি। বাংলাদেশের সম্পদ না বেচায় যদি ক্ষমতায় না আসি, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। শেখ মুজিবের মেয়ে কখনো দেশের সম্পদ বেঁচে ক্ষমতায় আসে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এতে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন। পদ্মা সেতুর থিমসং প্রচার করা হয়। এরপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বিকেল সভাপতির বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপরই প্রধান অতিথির ভাষণ রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সুধী সমাবেশে সেতুমন্ত্রীর ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।
এআর-০৩/০৫/০৭ (জাতীয় ডেস্ক)