সুপ্রিম কোর্টের অধীন বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় গঠনে আইন মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের মতামত নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের অনুমোদনক্রমে ওই চিঠি পাঠানো হয়।
রোববার পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, “বিশ্বায়নের এই যুগে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামোতে সাংবিধানিক বিধি বিধানের আলোকে নির্বাহী বিভাগের একচ্ছত্র ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতির প্রয়োগ ও চর্চার বিষয়টি সর্বজনবিদিত।”
“আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার পৃথকীকরণ কার্যকররূপে বাস্তবায়িত না হলে রাষ্ট্রে সংবিধানের সুসংহত চর্চা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। এর ফলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগসমূহের মধ্যে ক্ষমতার সূক্ষ ভারসাম্য বজায় রাখার যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা এক দিকে যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি অন্য দিকে সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তিও দুর্বল হয়ে পড়ে।”
সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ শাখার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের ইনার গার্ডেনে অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে অভিভাষণ প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিবৃন্দ, বিচার বিভাগ সংস্কার সংক্রান্ত কমিশনের চেয়ারম্যান, অ্যাটর্নি জেনারেল-সহ সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ও সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি অভিভাষণে দেশের বিচার বিভাগের জন্য একটি রোডম্যাপ তুলে ধরেন, যাতে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণের বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়।
অভিভাষণে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপনের লক্ষ্যে তিনি শিগগির পদক্ষেপ নেবেন। সেই ধারাবাহিকতায় পৃথক সচিবালয় গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাবনা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে ২০০৭ সালের পহেলা নভেম্বর বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করা হয়। কিন্তু রায় অনুযায়ী বিচার বিভাগ এখনও পুরো সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হতে পারেনি।
এআর-০৩/২৭/১০ (জাতীয় ডেস্ক)