শোয়ার ঘর থেকে দূরে রাখুন এই ১০টি জিনিস

শোয়ার ঘর থেকে

রোজকার ব্যস্ত জীবনে প্রতিদিন লেগে থাকে বেঁচে থাকার লড়াই। চলতে থাকে টিকে থাকার লড়াই। টাকার পিছনে প্রতিনিয়ত ছুটে চলি কারণ আমরা জানি আর মানিও যে টাকাই জীবনের শান্তির একটা বড়ো কারণ। কেননা যদি টাকার অভাবটা কমে তাহলেই চিন্তার একটা বড় অংশ কমে যায়। এই জন্যে সারাদিন কাজের মধ্যে ডুবে থাকার পর সাময়িক শান্তি খুঁজি কোথাও ঘুরতে গিয়ে। কখনো অফিস থেকে ফেরার পথে ক্লাবে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বা কখনো অতিপরিচিত চায়ের দোকানে ভিড় জমাই।

সবশেষে ফিরে আসি নিজের বাড়িতে। সারাদিনের ক্লান্তির পর আরামের শেষ ঠিকানা আমাদের নিজের বাড়ি। পাঁচতলা বাড়ি হোক বা দুই কামরার ছাদ দেওয়া বাড়ি, নিজের বাড়ি নিজের শান্তির আঁতুড়ঘর।

কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন যে এই বাড়ির নিজের ঘরটা কেমন করে সাজানো উচিত? আমরা তো বাইরেটা সাজিয়ে রাখার চেষ্টা করি, কিন্তু অগোছালো ঘর বা বলা ভালো আপনার নিজের বেডরুমটা ঠিক কেমন রাখা উচিত? আপনার সবসময়ের এই বেডরুম আপনার মানসিক শান্তির পিছনে কিন্তু অনেকটা গুরুত্ব রাখে। আপনার বেডরুম যাতে আপনার জীবনে নেগেটিভ প্রভাব না ফেলে, তার জন্যে কি কি করা উচিৎ নয়, সেই নিয়েই আপনার জন্যে রইলো আজকের ১০ টা পরামর্শ।

১. অফিসকে ঘরে আনবেন না

সারাদিন অফিসে কাজ করে বাড়িতে আমরা শান্তির জন্যে আসি। কাজের থেকে একটু হালকা হতে আমাদের বাড়িতে আসা। কিন্তু নিজের সাথে সময় দিতেই হোক বা নিজের স্বামী বা স্ত্রীর সাথে, অফিসের কাজের চাপ বেডরুম অব্দি না আসতে দেওয়াই ভালো। অফিসের কাজের পেপার বা ফাইল সামনে থাকলে অন্তরঙ্গ বা নিভৃত, কোনো মুহূর্তই আপনার জন্যে শান্তির হবে না।

২. অপ্রয়োজনীয় জিনিস জমা করবেন না

নিজের বেডরুমকে যথাসাধ্য সাধারণ রাখুন। অযথা অতিরিক্ত আসবাবপত্র দিয়ে ঘর ভরিয়ে রাখবেন না। বিছানার উপর জামাকাপড়ের স্তূপ বা বই এর স্তূপ দিয়ে ভরিয়ে রাখবেন না। মনে রাখবেন এগুলোর জন্যে ওয়ার্ড্রোব বা বুকশেলফ আছে।

৩. ইলে্ট্রনিক্ গ্যাজেট কে না

ইলে্ট্রনিক্ গ্যাজেট কে চেষ্টা করুন বেডরুমের বাইরে রাখতে। শুনতে হয়ত হাস্যকর শোনাবে কিন্তু এটা সত্যি। কারণ আমরা জানি আজকের দিনে এই গ্যাজেট আমাদের সময় কতটা নষ্ট করে দেয়। ফোনে সবসময় মুখ গুঁজে থাকতে থাকতে নিজস্ব সময় আর জায়গা টুকুও যে কমতে থাকে, এটা আমাদের মনে থাকে না। তাই চেষ্টা করুন দিনের শেষটা যেন মোবাইল ফোন কেড়ে না নেয়।

৪. এঁটো বাসন থাক ঘরের বাইরে

অনেক সময় হোম ডেলিভারির খাবার প্যাকেট খুলে আমরা আলসেমিতে বেডরুমে এনেই খেতে থাকি। বা কখনো চা বা কফি খেয়ে সেই কাপ ওখানেই ফেলে রাখি। এটা অস্বাস্থ্যকর এবং দৃষ্টিনন্দন নয়। খাবার পরে সেই প্লেট বা কাপ বা প্যাকেট বাইরে কিচেনে রেখে আসুন।

৫. টিভিকে না বলুন বেডরুমে

যদি আপনি অবিবাহিত হন তাহলে হয়তো টিভি আপনার জন্যে একটা সময় অব্দি আপনাকে সময় কাটাতে সাহায্য করবে। কিন্তু বিবাহিত হলে আপনি কখনোই চাইবেন না একটা যান্ত্রিক মাধ্যমের বিনোদন আপনার অন্তরঙ্গ মুহূর্তকে নষ্ট করুক। এছাড়াও অনেক সময় আমরা ঘুম আসছে না এই অজুহাতে টিভি চালিয়ে রাখি। এই স্বভাব আমাদের ঘুমানোর অভ্যেস অনেকভাবে পাল্টে দেয়।

৬. পোষ্যকে রাখুন বাইরে

অনেকেই এটা শুনলে কানে আঙুল দেবেন বা হাসবেন। অনেকে বলবেন যে আমাকে ছাড়া আমার পোষ্য ঘুমাতে পারে না। কিন্তু এটা পরীক্ষামূলক ভাবে সত্যি। আপনার রোজকার রুটিন আর আপনার পোষ্যর রোজকার নিয়ম এক না। আপনি নিশ্চয় চাইবেন না সারাদিনের ক্লান্তির পর আপনার ঘুম আপনার পোষ্যর মাঝরাতে ডাকাডাকি বা পায়চারিতে ভেঙে যাক।

৭. অতিরিক্ত কৃত্রিম আলো

অতিরিক্ত আলো না রাখার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন আপনার ড্রইং রুম আর বেডরুমের মধ্যে তফাৎ থাকা জরুরি। অতিরিক্ত আলো যাতে আপনার শান্তি বিঘ্নিত না করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

৮. ক্যাকটাস রাখবেন না

বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী বলা হয় যে বেডরুমে ক্যাকটাস বা অন্য কোনো কাঁটা গাছ রাখবেন না। কারণ বাস্তু মতে এতে সম্পর্কের শান্তি বিঘ্নিত হয়। ঘর সাজানোর অন্য ফুল বা বনসাই বা অর্কিড ব্যবহার করুন।

৯. ভাঙ্গা কাঁচ কেও না বলুন

বাস্তু মতে, ভাঙ্গা কাঁচ হলো সম্পর্ক ভাঙার প্রতীক। তাই বিশ্বাস থাকুক বা না থাকুক, আপনার সম্পর্কের খাতিরে ভাঙ্গা কাঁচ বা ভাঙ্গা আর্শি না রাখা ভালো।

১০. ধূমপান/অ্যালকোহল বেডরুমে না

আপনি বিবাহিত হন বা অবিবাহিত, সঙ্গী থাকুক বা না , নেশা করার অভ্যেস বেডরুম অব্দি না আমা শ্রেয়। আমাদের অতিরিক্ত ডোপামিনের আরামের জন্যে আমাদের অবচেতন মন সব সময় ওই নেশার দিকে ঝুঁকে থাকে। এই অভ্যেস হয়তো আপনার পছন্দের হলেও আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর পছন্দের নাও হতে পারে।

আরএম-০৪/১২/০২ (লাইফস্টাইল ডেস্ক, তথ্যসূত্র: বোল্ডস্কাই)