মন খারাপ, মুসড়েও পড়ছেন? নিজেকে ভালো রাখতে যা করবেন

মন খারাপ

সারাদিন ধরে কাজের মধ্যে, বাড়ির বাইরে সব জায়গার লোকের কথা ভেবেই ব্যস্ত, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে করেই চলেছেন সবার জন্য। নিজের জন্য ফুরসত তো মিলছেই না উল্টো পান থেকে চুন খসলেই শুনতে হচ্ছে কথা। এতে খারাপ লাগছে আপনার নিজেরও। যাঁদের জন্য ভালোবেসে করছেন এতকিছু, আপনি নিজে কী পাচ্ছেন তাঁদের থেকে ভালোবাসার একটু ছোঁয়া? এবার সময় এসেছে নিজের কথা ভাববার, অন্যদের পাশাপাশি নিজেকে ভালোবাসার।

কারণ ডাক্তারিশাস্ত্র বলছে যেসব লোক দায়িত্ববানের মতো সারাদিন সবাইকে সাহায্য করে চলেছেন, অথচ নিজের প্রতি খেয়াল নেই একেবারেই, তাঁরা খুব সহজেই মুসড়ে পড়েন জীবনের যে কোনও ছোট থেকে বড় রকমের সমস্যায়। নিজেকে ভালো রাখতে তাই এবার থেকে করতে হবে ঢালাও প্ল্যানিং, বদলাতে হবে আপনার দৈনন্দিন রুটিন আর আবিষ্কার করতে হবে নিজেকে নানাভাবে।

১। প্রিয় অভ্যাসগুলো ফিরিয়ে আনুন

লোকের জন্য সারাদিন ভাবতে ভাবতে হারিয়ে যাচ্ছে নিজের প্রিয় অভ্যাসগুলো। একটা সময় ছিল যখন আপনি ছবি আঁকতেন বা গান গাইতেন, খেলতেন ক্রিকেট অথবা ছিল ডাকটিকিটের নেশা। সেই অভ্যাসটা আবার ফিরিয়ে আনুন। দিনের মধ্যে অন্তত আধঘন্টা ব্যয় করুন নিজের প্রিয় জিনিসে, এতে আপনারই মন ভালো থাকবে।

২। লোকের সঙ্গে মিশুন

যাদের আপনি ভালো মানুষ হিসেবে চেনেন তাদের সঙ্গে মিশুন, কথা বলুন ও সময় কাটান। এতে আপনার দৈনন্দিন মানসিক চাপ থেকে অনেকটাই মুক্তি পাবেন। জানতে পারবেন অনেক নতুনকিছু। নিজের প্রতি হারিয়ে ফেলা আত্মবিশ্বাসকে ফিরে পাবেন আবার। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আড্ডা দিন প্রাণ খুলে, শৈশবের মতো মন খুলে অনেকটা করে হাসুন, হাসিই আপনাকে ভালো রাখবে। আপনার নিজের প্রতি নিজের ভালোবাসাকে ফিরিয়ে আনবে। ল্যাভেন্ডারের সেরা পাঁচটা উপকারিতা জেনে নিন শিশুর ছবি তুলতে হিমশিম খাচ্ছেন? রইল কিছু প্রো টিপস ক্রনিক কার্ডিওতে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি?

৩। নিজের স্বপ্ন পূরণ করুন

আপনার চোখে হয়তো এমন অনেককিছু স্বপ্ন রয়েছে যা নিয়ে প্রতিদিন আপনাকে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে হয় বিছানায় শুয়ে। প্রতিদিনের কাজের চাপে আপনার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না সেই লক্ষ্যে পৌঁছাবার। এবার সে সময় এসে গেছে। আপনাকে ভাবতেই হবে আপনার স্বপ্নকে নিয়ে। আপনার হাজারও ব্যস্ততার মধ্যে আধঘন্টা হলেও সময় দিন আপনার স্বপ্নকে। খাতায় লিখে ফেলুন আপনার না পূরণ হওয়া স্বপ্নগুলোর কথা আর প্রতিদিন সকালে উঠে পড়ে নিন সেগুলো। ওই অক্ষরগুলোর চাহনি আপনাকে কিন্তু বেশিদিন আপনার স্বপ্নকে ছেড়ে থাকতে দেবে না।

৪। বিফলতাগুলো ভুলে যান

আপনার অতীত আপনাকে প্রায়ই দুর্বল করে দেয় মানসিকভাবে। আপনি নিজের জন্য সময় বের করলেও মন দিতে পারছেন না নিজের প্রিয় জিনিসে, সেসব অতীত ভেবে। একটা খাতায় লিখে ফেলুন আপনার সব বিফলতাগুলো, তারপর কলম দিয়ে ক্রস করে কেটে দিন সেসব, বড় করে পাশে লিখুন অতীতের আমি থেকে এখনের আমি অনেক উন্নত, অনেক পরিণত। এ লেখা নিয়ম করে প্রতিদিন পড়ুন, দেখবেন আত্মবিশ্বাস নিজে থেকেই বেড়ে গিয়েছে অনেকটা। দেখবেন আপনি ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছেন নিজের প্রিয় অভ্যাসগুলোতে। কিছুদিন পর আপনার অতীত আপনার থেকে অনেক দূরে সরে গেছে।

৫। নিজের গল্প লিখুন

নিজের প্রতিভার কথা, নিজের জীবনের সাফল্যের কথা লিখে ফেলুন ডায়েরিতে। জীবনের যা কিছু ছোট থেকে বড় সাফল্য আপনি অর্জন করেছেন আজ পর্যন্ত লিখে ফেলুন সবই। এরপর সেগুলো পড়ুন নিয়ম করে প্রতিদিন। এতে দেখবেন আপনার কাছে আপনি আগের তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্ব পাচ্ছেন। আপনার নিজের চাপা পড়া প্রতিভাগুলোও ফিরে আসছে ধীরে ধীরে। এখনের সময়ে খুব কম লোকেই পরস্পরের জন্য ভাবে। সেখানে আপনি নিজের সারাদিনটা সবার জন্য দিয়েও নিজের জন্য যদি এক দু’ঘন্টা বের করতে পারেন, একান্ত নিজের সময় করে তাকে উপভোগ করতে পারেন তবে দেখবেন আপনি আগের তুলনায় অনেক ভালো আছেন মানসিক ও শারীরিকভাবে। কারণ দিনের শেষে এটা মনে রাখতেই হবে, নিজে ভালো না থাকলে কাউকে ভালো রাখা যায় না।

আরএম-০৪/০৩/০৪ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)