বাড়িতে আগুন লাগলে কী করবেন?

বাড়িতে আগুন

বেড়েই চলেছে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। শুধু রাতেই নয়, দিবালোকেও মানুষ আগুন আতঙ্কের দুঃস্বপ্নে ভুগছেন। বর্তমানে অগ্নিকাণ্ড এক মূর্তিমান উদ্বেগ। সারা দেশের মানুষ অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে সারা দিনই উদ্বিগ্ন থাকে যে, কখন কোথায় যেন আগুন লেগে যায়!

গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। এর মধ্যেই গত ২৮ মার্চ ঢাকার বনানীতে ২৩ তলা বাণিজ্যিক ভবন এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের নিরলস প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এ ঘটনায় নিহত হন ২৬ জন।

এই ঘটনার দুই দিনের মাথায় নগরভবনে এ বিষয়ে সভা শুরুর আগে আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে যায় গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেট লাগোয়া কাঁচাবাজারটি।

রান্না ঘরের প্রস্তুতি

১. রান্নাঘরে একটি বালতিতে ভরে বালু রাখুন। আগুনে কাজে লাগবে।

২. বাড়িতে রান্নাঘরের কাছাকাছি অন্যান্য ঘরের সংযোগস্থলে ফায়ার অ্যালার্ম লাগান (smoke detector)।

বাড়িতে আগুন লাগলে কী করবেন?

১. চিৎকার করে সবাইকে জানান দিন। বের হতে হতে চিৎকার করতে থাকুন আগুন-আগুন। এটা ভয়ের চিৎকার না, সতর্কতার চিৎকার।

২. কোনো মূল্যবান জিনিস সংগ্রহের চেষ্টা করবেন না, তা যত মূল্যবান-ই হোক না কেন। আপনি ও আপনার পরিবারের সদস্যদের জীবনই এ সময় সর্বাপেক্ষা জরুরি। ১ সেকেন্ড সময়ও মূল্যবান।

৩. আমরা মারা যাচ্ছি- এমন কোনো কথা বলবেন না। চেঁচামেচি করবেন না। সাহস না হারিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করবেন। পরিস্থিতি যতটা শান্ত রাখা যায় বিপদমুক্তির সম্ভাবনা তত বেশি।

৩. আপনার গায়ে আগুন লেগে গেলে মনে রাখবেন STOP, DROP, ROLL- কোনো অবস্থায় দৌড়াবেন না, এমনকি সামনে পানির বালতি থাকলেও না। থামুন, গড়িয়ে গড়িয়ে যেদিকে যেতে চান সেদিকে যান।

৪. নাক কাপড় দিয়ে ঢাকুন, হাতের কাছে পানি থাকলে কাপড় ভিজিয়ে নিন।

৫. সিঁড়িঘরে গেলে যদি ধোঁয়া দেখতে পান তাহলে কখনো ওপরে উঠবেন না। ছাদে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। ধোঁয়া বাতাসের থেকে হালকা- তাই তা ওপরের দিকে ওঠে। এবং সেটা ইনহেল করে আপনি প্রথমে বেহুশ হয়ে যাবেন তারপর অজ্ঞান অবস্থায় মারা যাবেন।

৬. যদি সিঁড়ি দিয়ে নামা বিপজ্জনক হয় তবে বারান্দা, বা জানালার কাছে চলে যাবেন; এতে হাতে বেশি সময় পাবেন।

৭. ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন পথ পরিহার করুন। যদি বাধ্য হন ধোঁয়ার মধ্যে দিয়েই যেতে হবে তবে মনে রাখবেন – get low and go under the smoke.

রুম বা পথ ধোঁয়ায় ভরে গেলে হেটে বের হওয়ার চেষ্টা করবেন না। উপুড় হয়ে বা হামাগুড়ি দিয়ে বের হতে চেষ্টা করবেন। ধোঁয়া ওপরে ওঠে বলে নিচের বাতাসে অক্সিজেন বেশি থাকে। এতে আপনি বেহুশ হওয়ার আগে বেশি সময় পাবেন।

ধোঁয়ায় কিছু দেখা না গেলে ও একাধিক সদস্য থাকলে একজনের পেছনে আরেকজন হামাগুড়ি দেবেন-একে অন্যের কাপড় বা পা ধরে।

সাহসী ও বিপদে দিশেহারা হননি এমন কেউ নেতৃত্ব নেবেন। কেউ কিছুক্ষণ পরে পরে সান্ত্বনা দেবেন- আমরা ঠিক আছি, সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ- এমনটা বলতে থাকবেন।

আরএম-১১/০৩/০৪ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)