রোজা রাখা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ। রোজা পালন করা অবস্থায় রোগীর ওষুধপত্র সেবন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে।
রোজা রাখা, ওষুধপত্র খাওয়া এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা নিয়ে অনেকের মনে এ সময় সংশয় দেখা দেয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগী এসব ব্যবস্থাপত্র নিলে রোজার ক্ষতি হয় না বা রোজা নষ্ট হয় না।
অসুস্থ অবস্থায় রোজা রেখে ওষুধ গ্রহণের ব্যাপারে বিশ্বের ইসলামী চিন্তাবিদ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ইসলামী আলেম, ওলামা ও চিন্তাবিদদের সঙ্গে কথা বলে কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, রোজা থাকাবস্থায় বেশ কয়েকটি পন্থায় ওষুধ সেবন ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে রোজা নষ্ট হবে না।
এ ক্ষেত্রে নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী বলেন, কয়েক পন্থায় ওষুধ গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হয় না। রোজা রাখাবস্থায় চোখ, কান ও নাকের ড্রপ নেয়া যাবে।
রোগীর বুকে ব্যথা হলে নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে জিহ্বার নিচে নিতে পারবেন। মূত্রথলী পরীক্ষা বা এক্স-রে করার জন্য রোগীর প্রস্রাবের দ্বার দিয়ে ক্যাথেটার অথবা অন্য কোনো যন্ত্র প্রবেশ করানো হলে রোজা ভঙ্গ হবে না।
মেসওয়াক অথবা ব্রাশ দিয়ে কেউ দাঁত পরিষ্কার করার সময় পাকস্থলীতে থুতু অথবা টুথপেস্ট প্রবেশ না করলে রোজা ভাঙবে না।
রোগীর চামড়া, মাংস ও শিরায় ইনজেকশন দেয়া যাবে। কিন্তু এ ইনজেকশন খাদ্যদ্রব্য (যেমন- স্যালাইন, ডেক্সট্রোজ স্যালাইন) হলে চলবে না। যে কেউ রক্ত দিতে পারবেন আবার চিকিৎসা নিতেও পারবেন।
কোনো রোগী অক্সিজেন অথবা অজ্ঞানকারী গ্যাস (এনেসথেসিয়া) নিলে রোজা ভঙ্গ হবে না। চর্মজাতীয় রোগ নিরাময়ে চামড়ায় মলম নেয়া যাবে।
আবার শরীরের কোনো হাড় ভেঙে গেলে সে ক্ষেত্রে প্লাস্টার করলে রোজা ভঙ্গ হবে না। কারও কোনো অসুখ হলে পরীক্ষার জন্য তার শরীর থেকে রক্ত নেয়া যাবে। হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী হার্টের এনজিওগ্রাম করার জন্য আর্টারিওগ্রাফ করতে পারবে না।
রোগীর অপারেশন অথবা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এন্ডোসকপি করলে রোজা ভাঙবে না। মুখ পরিষ্কারের জন্য মাউথওয়াশ বা কুলি করা যাবে, যাতে পাকস্থলীতে কোনো কিছু না যায়।
জরায়ু পরীক্ষার জন্য শরীরে কোনো যন্ত্রপাতি বা অন্যকিছু পরীক্ষার জন্য প্রবেশ করালে রোজায় কোনো সমস্যা হবে না। লিভার বায়োপসি অথবা অন্য কোনো অঙ্গের বায়োপসি করলে রোজা নষ্ট হবে না।
নাকে স্প্রে ও ইনহেলারজাতীয় কিছু নিলে কোনো সমস্যা নেই। রোগীর পায়ুপথে ইনজেকশন অথবা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোনো কিছু প্রবেশ করালে অথবা শরীর অবশ করালে রোগী যদি ইচ্ছা করেন তা হলে তিনি রোজা থাকতে পারবেন।
রোগীর কিডনি ডায়ালাইসিস করালে রোজা ভাঙবে না। পাকস্থলী পরীক্ষা করার জন্য গ্যাসট্রোস্কপি করা যাবে কিন্তু কোনো তরল প্রবেশ করানো যাবে না।
এ মতামতগুলো নিয়ে অনেক চিকিৎসকের মধ্যে বিভ্রান্তি হতে পারে। তবে এ মতামতগুলো বিশ্বের ইসলামী চিন্তাবিদ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত।
আরএম-০৪/১০/০৫ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)