প্রেমে নিয়মিত দেখা হওয়া জরুরি?

প্রেমে নিয়মিত

প্রেমের সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রতিদিন দেখা হওয়াটা কি জরুরি? বিশেষজ্ঞ বলছেন, ‘একদমই জরুরি না।’ বরং এতে নাকি আরও হিতে বিপরীত হতে পারে। ভালোবাসার বদলে ঘৃণা জন্ম নেবে সেখানে। তবে সেটা আবার সবার জন্য এক রকম নয়। বয়সের ভেদে বিভিন্ন রকম।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুলতানা আলগিন বলেন, ‘দেখা হওয়া খুব জরুরি না হলেও বোঝাপড়াটা জরুরি। যদি একজন অন্যজনকে ঠিকমতো বুঝতে পারে, তাহলে নিয়মিত দেখা না হলেও ভালোবাসা অটুট থাকবে। আর প্রতিদিন কারও সঙ্গে দেখা হলে গুরুত্ব কমে যাওয়ার ভয় থাকে।’

তবে সেখানে বয়সের তারতম্য একটা বড় দিক বলে মনে করেন মনোরোগ চিকিৎসকেরা। এ ক্ষেত্রে একজন কিশোর প্রিয়জনের সঙ্গে প্রতি ঘণ্টা থাকতে চাইবে, আবার তরুণেরা হয়তো সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন দেখা করেই খুশি। বয়স বাড়তে থাকলে দেখা করার আকাঙ্ক্ষাও কমে আসে। তবে প্রেম অটুট রাখতে সব বয়সের যুগলদেরই মনের কথা খুলে বলার মানসিকতা থাকতে হবে।

এই প্রতিবেদন তৈরিতে বিভিন্ন বয়সের বেশ কিছু জুটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় প্রেমের ক্ষেত্রে প্রতিদিন প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করার প্রবণতা রয়েছে। রাজধানীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রিয়াদ (ছদ্মনাম) বলেন, ‘প্রেমিকার সঙ্গে এক দিন দেখা না হলে মন খারাপ থাকে। অবশ্য মাঝেমধ্যে বাড়িতে গেলে ফোনই ভরসা। তখন ভিডিও কলের মাধ্যমে একজন অন্যজনের চেহারা দেখার চেষ্টা করি।’

আবার অন্য মতও পাওয়া গেল ফারজানা পারভীনের (ছদ্মনাম) কাছে। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির অপেক্ষায় থাকা ফারজানা বলেন, ‘আমাদের প্রেম পাঁচ বছরের। দুজনেই চাকরি খুঁজছি। তাই প্রতিদিন দেখা করা হয়ে ওঠে না। তবে দিনে অন্তত একবার কথা হয়। দেখা কমহওয়ায় আমাদের মধ্যে সমস্যা হচ্ছে না। তবে সময় পেলে দেখা করি।’

যুক্তরাষ্ট্রের জনগণনা ব্যুরোর ধারণা, ৩৫ লাখ বিবাহিত মার্কিন প্রিয়জনের কাছ থেকে দূরে থাকেন। তবে যৌক্তিক কারণ থাকলে প্রেমের ক্ষেত্রে সেটা কোনো বাধা না। তাহলে ‘আউট অব সাইট, আউট অব মাইন্ড’ বলে যে উক্তিটি প্রচলিত আছে? সুলতানা আলগিন বলেন, ‘ওই যে শুরুতেই বলেছি, দুজনের মধ্যে বোঝাপড়াটা থাকা দরকার। তবে দিনের পর দিন কেউ যদি অযৌক্তিক কারণে প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে দেখা না করে, তাহলে সেই সম্পর্কও টিকবে না। তাই বিশেষ দিনগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’ এ ছাড়া প্রিয়জনের সঙ্গে মনের কথা খুলে বলার সাহস ও মানসিকতা থাকতে হবে। ‘মনে মনে কষ্ট পেলাম আর অন্যজনকে বললাম না, এমনটা হলেও প্রেমের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।’

প্রতিদিন দেখা হলে নানা ধরনের ইস্যু সামনে এসে দাঁড়ায়। যেসব বিষয় নিয়ে পরে ঝগড়াঝাঁটি হয়ে প্রেম উবে যেতে পারে। তাই প্রতিদিন নয়, বরং বোঝাপড়া ঠিক রেখে একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর দেখা হলেই প্রেম বাড়বে।

আরএম-১১/২৪/০৬ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)