পেট ব্যথার হাজার কারণ, কোনওটাই অবহেলা করবেন না

পেট ব্যথার

মাথা থাকলেই যেমন ব্যথা হবে, পেট থাকলেও ঠিক তাই৷ কিন্তু মজার কথা হল, যে যখন যেখানে পেট ব্যথায় ভোগেন, তখন তাঁর মনে হয়, দুনিয়ার এই কষ্ট বোধহয় আর কারোর হয়নি৷ শুধু তা-ই নয়, সেইসঙ্গে হাতের কাছে যে ওষুধ পাওয়া যায়, সেই ওষুধই গলাঃধকরণ করেন তিনি৷

প্রথমেই বলে নেওয়া যাক, এই অভ্যেস ঠিক নয় মোটেও৷ একটু আধতু পেট ব্যথা হল আর আপনি জোয়ানের আরক খেয়েনিলেন, তাতে সেভাবে কোনও সমস্যা নেই৷ কিন্তু নিয়মিত যদি আপনার পেটব্যথা হয়, তাহলে সতর্ক থাকুন৷ জানার চেষ্টা করুন, কেন আপনার মাঝেমধ্যেই পেটব্যথা হয়৷

যদি বোঝেন হাইপার অ্যাসিডিটির কারণে আপনার পেটব্যথা হচ্ছে, তাহলে বোঝার চেষ্টা করুন, কী খাওয়ার ফলে আপনার এরকম হচ্ছে৷ বাইরের ভাজাভুজি বা তেলমশলা এড়িয়ে চলুন৷ শুকনো লঙ্কা খাবেন না একদম৷ পেট ভরতি থাকলে, বন্ধুবান্ধবদের অনুরোধে হুটহাট করে কিছু খেয়ে নেবেন না৷ এতে করেও বদহজম বা গ্যাস-অম্বল হতে পারে৷ আর যার থেকে হতে পারে পেটব্যথা৷

যদি দেখেন খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করেও আপনাকে সেই একই সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে, তাহলে সতর্ক হোন৷ হতে পারে গলস্টোন থেকে আপনার মাঝেমধ্যে পেটব্যথা করে৷ তবে সেই ব্যথা খুব তীব্র৷ সাধারণ গ্যাস-অম্বল বা পেটভারের মতো নয়৷ তীব্র ব্যথা হলে পেনকিলার খেতেই পারেন, তবে তা যথেষ্ট সাবধানে৷ ব্যথা কমছে না বলে যদি মুঠোমুঠো পেনকিলার খান, তাহলে কিন্তু বিপদ৷ কারণ, হয়তো সাময়িকভাবে আপনার পেটব্যথা কমে গেল, আপনি কিছুটা রিলিফ পেলেন, কিন্তু রোগ নির্ণয় হলো না৷ হতে পারে গলস্টোনের কারণে আপনার ব্যথা হচ্ছে, ডাক্তারের কাছে গেলে তা ধরা পড়তে পারে৷ কিন্তু আপনি ভেতরে –ভেতরে রোগ পুষে রেখে একেবারে বিষয়টাকে একেবারে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে নিয়ে গেলেন৷ তখন এমার্জেন্সি অপারেশন করা ছাড়া আর উপায় থাকবে না৷

ইরেটেবল বাওয়েল সিনড্রোম থেকেও মাঝেমধ্যে পেটব্যথা করতে পারে৷ সেক্ষেত্রে চিন্তার কিছু নেই৷ নিয়মিত প্রোবায়োটিক খেতে হবে আপনাকে৷ সে টকদই হোক কি ক্যাপসুল ফর্মে৷ আর মনমেজাজ যতটা সম্ভব ভাল রাখতে হবে আপনাকে৷ ঘুম যদি ঠিকঠাক না-হয় বা দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগের মধ্যে থাকতে হয়,তাহলে অবশ্যই সায়কিয়াট্রিস্টের পরামর্শ নিন৷

এছাড়াও অ্য়াপেনডিক্সের কারণে পেটব্যথা হতে পারে৷ তবে সেই ব্যথাও খুব তীব্র৷ সেক্ষেত্রে অযথা সময় নষ্ট না-করে ডাক্তারের কাছে যান৷

মোট কথা, বিভিন্ন কারণে পেটব্যথা হতে পারে৷ সব ব্যথাকে গ্যাসের ব্যথা বলে অবহেলা করবেন না৷ আবার তা নিয়ে সারাক্ষণ ভয়ানক চিন্তাতেও ডুবে থাকবেন না৷ প্রথমে খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করুন৷ সারাদিনে যাতে অন্তত সাত থেকে আটঘণ্টা ভাল ঘুম হয় তার দিকে নজর রাখুন৷ এরপরেও যদি সমস্যা থেকেই যায়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷

আরএম-০৮/১০/০৯ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)