ওমলেট, সিদ্ধ বা পোচ, জেনে নিন কীভাবে ডিম খেলে পুষ্টি হবে সবচেয়ে বেশি

ওমলেট

ডিম খেতে কে না ভালবাসে? কারও পছন্দ পেঁয়াজ, লঙ্কা দিয়ে জমিয়ে ওমলেট, কারও চাই পোচ, তো কেই চায় ভাতের পাতে কষা কষা ডিমের ডালনা৷ ডিম সব রকম ভাবেই পুষ্টিকর৷ জেনে নিন কীভাবে ডিম খেলে পুষ্টি হবে সর্বাধিক৷

ওমলেটে যেহেতু বেশ কিছু সব্জি দেওয়া হয় তাই ডিমের প্রোটিনের সঙ্গে সব্জির ভিটামিনও পায় শরীর৷ কিন্তু ওমলেট অনেকক্ষণ ধরে বেশি আঁচে ভাজার কারণে কুসুমে থাকা কিছু মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট নষ্ট হয়ে যায়৷

ডিম সম্পূর্ণ সিদ্ধ হতে ৮-১০ মিনিট হয়৷ যেহেতু সিদ্ধ পুরোটাই জলে হয় তাই সম্পূর্ণ ফ্যাট ফ্রি কুকিং৷ কিন্তু এর ফলে ডিমের সাদা অংশের কিছুটা খোসায় লেগে নষ্ট হয়৷ তাই প্রোটিনের পরিমাণ কমে যায় কিছুটা৷ আবার বেশিক্ষণ চড়া আঁচে সিদ্ধ হওয়ার ফলে কুসুমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট লুটেন নষ্ট হয়ে যায়৷

ফুল বয়েলড ডিমের মতোই হাফ বয়েলড ডিমও ফ্যাট ফ্রি কুকিং৷ এতে কুসুমের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও অনেকটাই বজায় থাকে৷ তবে ডিমের খোসা ছাড়াতে গিয়ে প্রায় পুরো সাদা অংশটাই বেরিয়ে যায়৷ ফলে সাদা অংশের প্রোটিন প্রায় পাওয়াই যায় না৷

পোচড ডিমে কুসুম একেবারেই টলটলে থাকে৷ ফলে কুসুমের পুষ্টি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় পোচড খেলেই৷ তবে খুব ভাল মানের ডিম না হলে পোচ খাওয়া উচিত নয়৷ বাসি ডিম হলে জলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাদা অংশ বুরবুরি কাটতে শুরু করে৷ এতে সাদা অংশের প্রোটিন অনেকটাই চলে যায়৷

স্ক্র্যাম্বলড এগ খাওয়ার সময় সবচেয়ে ভাল হয় যদি সাদা অংশ ও কুসুম একসঙ্গে খাওয়া হয়৷ এতে ডিম খুব তাড়াতাড়ি ফ্লাফি হয়ে যায়৷ ফলে বেশি আঁচে পুষ্টি নষ্ট হয় না৷ তবে স্ক্র্যাম্বলড এগ মানেই ওভারকুকড এগ৷ তাই এতে ডিমের ভিটামিন বি১২ অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়৷

তবে ডিমের সব পদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সানি সাইড আপ৷ ঠিকমতো বানালে এতে কুসুম টলটলে থাকায় পুরো পুষ্টিই বজায় থাকে৷ কিন্তু এতে ডিম ওল্টানো হয় না৷ ফলে শুধু একপিঠই রান্না হয়৷ ফলে থেকে যেতা পারে ব্যাকটেরিয়া৷

এবার আসা যাক ফ্রায়েড এগের প্রসঙ্গে৷ ফ্রায়েড এগ দুধরনের হয়৷ একভাবে দুপিঠ ভাজা হলেও বিতরে কুসুম টলটলে থাকে৷ এর ফলে সানি সাইড আপের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ভয় কমে যায়৷ কারণ সাদা অংশ পুরোপুরি ভাজা হচ্ছে৷ কিন্তু ডিম উল্টে দেওয়া মানেই উল্টো পিঠেও কিছুটা তেল লাগছে৷ ফলে এই ডিমে কিছুটা ফ্যাট খাওয়া হয়েই যায়৷

এবার আসি দ্বিতীয় রকম ফ্রায়েড এগের কথায়৷ এতে ডিম উল্টে পাল্টে এমন ভাবে ভাজা হয় যাতে কুসুমও পুরোপুরি সিদ্ধ হয়৷ তবে এতে ডিমের পুষ্টির বেশিটাই নষ্ট হয়ে যায়৷ ডিমের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট জ্যান্থোফিলস-এর ১৮ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়৷

স্বাস্থ্যের কারণে এখন অনেকেই এগ হোয়াইট খান শুধু৷ গোটা ডিমে যেখানে প্রোটিনের পরিমাণ ৬ গ্রাম ও ক্যালোরি ৬০, সেখানে শুধু এগ হোয়াইটেই রয়েছে ৩ গ্রাম প্রোটিন৷ অথচ ক্যালোরি মাত্র ১৫৷ তবে এগ হোয়াইট খেলে কুসুমে থাকা সেলেনিয়াম, রাইবোফ্লাভিন, ভিটামিন ডি, ফসফরাস, ভিটামিন বি১২, ফোলেট, আয়রন, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬ ও কোলিন কিছুই পায় না শরীর৷

সবশেষে আসি কাঁচা ডিমের কথায়৷ যারা শরীরচর্চা করেন তারা অনেকেই কাঁচা ডিম খান৷ নিঃসন্দেহে কাঁচা ডিমে ভিটামিন এ-র পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে৷ তবে কাঁচা ডিম থেকে সালমোনেল্লা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ঝুঁকিও সবচেয়ে বেশি৷

আরএম-২৫/১১/০৯ (লাইফস্টাইল ডেস্ক, তথ্যসূত্র: নিউজ১৮)