পাত্রপাত্রী দেখার কিছু আদব

পাত্রপাত্রী

সন্ধ্যায় পাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা। কোথায় দেখা করবেন, কি না কি প্রশ্ন করবেন, পছন্দ হবে তো, পছন্দ না হলে শেষে কি বলবো, কাকে সঙ্গে নিয়ে যাবো, নার্ভাস হয়ে যাই কিনা- এই নিয়ে খুব চিন্তা হচ্ছে। এই পাত্রী যদি আপনাকে পছন্দ না করে, তখনই বা কি হবে। এগুলো চিন্তায় কপালে ঘাম দিচ্ছে। কিন্তু এগুলো নিয়ে তো এতো চিন্তার কিছু নেই। পাত্রপাত্রী দেখাটা তো খুব কমন একটি বিষয়। তাই চিন্তা বাদ দিন।

হয়ত ভাববেন আজকালকার যুগে আবার পাত্রপাত্রী ঘটা করে দেখার চল আছে নাকি। আজকাল তো বেশিরভাগ নিজেদের পছন্দে বিয়েশাদি হয়। আর জানাশোনার গুরুদায়িত্বটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিভিন্ন ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটগুলো তো নিয়েছেই। তবুও ঘটা করে যখন পাত্রপাত্রী দেখা হয়, তখন পাত্রপাত্রীদের কিছু নিয়মকানুন তো মেনে চলতেই হবে। এজন্য মাথায় রাখতে হবে কিছু বিষয়-

পাত্রপাত্রীর ছবি দেখে কারো সম্বন্ধে কোনো ধারণা করা ঠিক নয়। ছবিতে যেরকম দেখায়, বাস্তবে সে রকম নাও হতে পারে। তাই দেখা হওয়ার পর কথা বললে কিছুটা বোঝা সম্ভব সে কেমন মানুষ হতে পারে। অতএব চুপ করে না থেকে কথা বলার চেষ্টা করুন। নিজে জানুন ও আপনাকে জানার সুযোগ করে দিন।

দুজনেই দুজনার জীবনযাপন বা ভালোলাগা অথবা শখ সম্বন্ধে আগে থেকেই কিছুটা হলে জেনে নিন। তাহলে প্রথম পরিচয়ে অনেক বিষয় পাবেন কথা বলার জন্য। যে সম্বন্ধ করছে বা আত্মীয়দের কাছে তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে রাখুন। তার অতীত, তার বর্তমান, তার কার্যকলাপ, তার কর্মজীবন, শখ, পছন্দ সবই জেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন।

পাত্রপাত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য অবশ্যই একটি ভালো জায়গা নির্বাচন করুন। এমন কোনো জায়গায় যাবেন না যেখানে সে অস্বস্তিবোধ করে। অথবা চেষ্টা করুন তার পছন্দের জায়গায় যাওয়ার। যেখানে সে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। অবশ্যই খোলামেলা, কোলাহলমুক্ত কোনো স্থানে বসবেন।

একা না গিয়ে বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেখা করতে যাওয়ার চেষ্টা করুন। অনেক কিছুই নিজে বলতে পারবেন না বা বললে ভালো দেখাবে না সে ক্ষেত্রে বন্ধু বা আত্মীয়দের দিয়ে বলানোর চেষ্টা করুন। খুব ব্যক্তিগত কথা থাকলে সেটা আলাদা বলতে পারেন। তবে খুব কাছের কেউ থাকলে দুজনেই কথা বলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন।

আর দেখা করার একদিন আগে অন্তত ফোনে অল্প হলেও কথা বলে নিন। এতে একেবারে অপরিচিত ভাবটা থাকবে না। কারণ প্রথমে পরিচিত হতে গিয়েই অনেক সময় লাগে, লজ্জা বা বিব্রতবোধ চলে আসে। তাই আগে ফোনে কথা বলে হালকা হয়ে নিন।

দেখা করতে গিয়ে আগেই প্রশ্ন করা শুরু করবেন না। প্রথমে সৌজন্যমূলক কিছু কথা বলে পরিবেশটা স্বাভাবিক করে নিন। কিসে করে আসলো, আসতে সমস্যা হলো কিনা, পথে জ্যাম ছিল কিনা- এই ধরনের কথা বলে পরিবেশটা হালকা করে নিন।

খুব ব্যক্তিগত প্রশ্নগুলো প্রথম পরিচয়েই জিজ্ঞেস করবেন না। রান্না করতে পারেন, আপনার বেতন কতো, আগে কোনো সম্পর্ক ছিল কিনা, আপনার আসলে কেমন ছেলে বা মেয়ে পছন্দ- এই জাতীয় প্রশ্ন না করাই ভালো। চাকরির সাক্ষাৎকারের মতো প্রশ্ন না করাই ভালো।

যে জায়গায় দেখা করবেন সেখানে যেন দুজনেরই আসতে সুবিধা হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

রেস্তোরাঁর মেনু দেখে বিপরীত লিঙ্গের মানুষটিকে খাবার অর্ডার দিতে বলুন। এটা এক ধরনের ভদ্রতা।

নিজের সম্পর্কে অযথা বাড়িয়ে বলবেন না। পরে সেগুলো ভুল প্রমাণিত হলে সম্পর্ক মাঝপথেই ভেঙে যেতে পারে। বিপরীত লিঙ্গের মানুষ যদি কথা বলতে সংকোচ বোধ করে তাহলে তাকে কথার মাধ্যমে স্বাভাবিক হতে সাহায্য করুন।

নিজের পরিবার, আত্মীয়-পরিজন সম্বন্ধে জানানোর চেষ্টা করুন। যাতে পরে সে সবার সম্বন্ধে ধারণা রাখতে পারে।

অন্য প্রসঙ্গ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। যদি কোনো কথায় অপরপক্ষের মানুষের মন খারাপ হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলুন।

মানুষটিকে যদি আপনার পছন্দ না হয় তাহলে তাকে ভুলেও তখন বুঝতে দিবেন না। সরাসরি জানতে পারলে সে মনে অনেক কষ্ট পাবে।

কোনো কথা তার কাছে লুকানোর চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন কোনো কিছু লুকিয়ে সম্পর্ক টেকানো সম্ভব হয় না।

দেখা শেষ করে কিভাবে সে বাসায় ফিরবে তা ভালোভাবে জেনে তাকে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করুন।

আরএম-০৫/১০/১০ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)