মানসিক চাপ এবং হতাশা দূর করে গোলাপ ফুল

প্রাচীনকাল থেকেই স্বাস্থ্য সচেতনতায় গোলাপের চর্চা হয়ে আসছে। বিশ্বের অনেক দেশেই গোলাপ ফুল খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। গোলাপের পাপড়ি হোক বা কুড়ি সবই খাদ্য গুণে ভরপুর। গোলাপ ফুল খাওয়ার হাজারো উপকারিতা রয়েছে।

গোলাপের পাপড়িতে ৯৫ শতাংশ পানি আছে। তাই এর ক্যালোরি অত্যন্ত কম। এছাড়া ভিটামিন সি পাওয়া যায় গোলাপের পাপড়িতে। প্রাচীনকালে চীনে বদহজমের সমস্যায় গোলাপের পাপড়ি খাওয়া হত। নারীদের ঋতু সমস্যাতেও গোলাপের পাপড়ি উপকারী।

গোলাপ ফুল একটি সবজি বা ফলের ক্যাটাগরিতে পড়ে না। এটা বিভিন্ন ধরণের রান্নায় বিশেষ করে মিষ্টি জাতীয় খাবারে তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। গোলাপের মন মাতানো গন্ধ অ্যারোমা থেরাপির কাজ করে। গোলাপ ফুল খেলে শরীরের ভেতর থেকে তার তরতাজা মন হবে। প্রাচীনকাল থেকেই ফুলের ব্যবহার হয়ে আসছে মানব দেহের, মনের এবং ত্বকের উপকারী বস্ত হিসেবে।

গোলাপের ফুলের পাপড়ির ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির অন্যতম উপকরণ হিসেবে যেমন পরিচিত তেমনি মানসিক চাপ দূরীকরণে এবং প্রাকৃতিকভাবে ওজন কমাতে সত্যিই অনেক কার্যকরী। গোলাপ ফুলের এমনই কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা  সম্পর্কে জেনে নিন-

> ওজন নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে

গোলাপের পাপড়িতে বিদ্যমান যৌগ মেটাবলিজমকে উন্নত করে। দেহের টক্সিন দূর করে যা ওজন কমাতে খুবই কার্যকরী। এক মুঠো গোলাপ পাপড়ি সেবনে আপনাকে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে দূরে রাখবে যা ন্যাচারাল ভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

> মানসিক চাপ এবং হতাশা দূর করে

হতাশা এবং মানসিক চাপ সাধারণত আসে অনিদ্রা এবং বিশ্রামহীনতার অভাবে। যা অত্যন্ত বিরক্তবোধ এবং উদাসীনতার সৃষ্টি করে। গোলাপের পাপড়ি এবং এর নির্যাস এই ধরনের সমস্যা দূর করতে অধিক কার্যকরী। একটি গবেষণা অনুসারে যখন গোলাপের নির্যাসের সুবাস নেয়া হয় তখন তা চরম প্রশান্তি সৃষ্টি করে।

> পাইলস সমস্যা দূরীকরণে

গোলাপের পাপড়ি পাইলস দূরীকরণে খুবই সহায়তা করে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে এর মধ্যে রয়েছে ফাইবার এবং পানি। এছাড়াও রয়েছে হজম শক্তি বৃদ্ধিকারি যৌগ যা দেহের টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে।

> ত্বকের সুরক্ষায়

ত্বকের সুরক্ষায় গোলাপ জল অনেক উপকারী। বিশেষ করে সেনসিটিভ ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে, ত্বকের তৈলাক্ততা সমাধানে, ত্বককে সফট করতে খুবই কার্যকরী। ত্বকের সুরক্ষার ক্ষেত্রে গোলাপ জলকে বেছে নেয়াটা খুবই বুদ্ধিমানের। কারণ এটি ত্বকের গভীরে পরিষ্কার করে যা আপনার ত্বককে অনেক বেশি নবীন করে তুলে। গোলাপের পাপড়িতে বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল যৌগ যা ত্বকের ত্বকের রুক্ষতা দূর করে ত্বককে দেয় প্রশান্তি এবং ঘামাচি ও চুলকানি থেকে দূরে রাখে।

> ব্রণ সমস্যায়

ব্রণ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে একমাত্র গোলাপ জলই ভরসা। গোলাপের পাপড়ির অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল যৌগ ব্রণ সমস্যা দূর করতে অতীব কার্যকরী। এছাড়াও ফেনিল ইথানল, এন্টিসেপ্টিক যৌগ যা গোলাপ জলে বিদ্যমান তা ব্রণের সমস্যা দূর করবে নিমিষেই।

> ঠোঁটের কালার উজ্জ্বল করুন

গোলাপ ঠোঁটের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এটি শুধু ঠোঁটের উজ্জ্বলতাই বৃদ্ধি করবে না পাশাপাশি ঠোঁটকে অনেক সফট এবং গোলাপি করে তুলবে। এছাড়াও গোলাপের পাপড়ি ঠোঁট ফাটা দূর করতে সাহায্য করবে।

যেভাবে তৈরি করবেন গোলাপ চা

গোলাপ চা তৈরির জন্য যে পাপড়ি বেছে নেয়া হবে তা যেন অবশ্যই কীটনাশক মুক্ত হয়। নিজের গাছের গোলাপ হলে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন। আর যদি কেনা গোলাপ হয় তাহলে বাইরের দিকের পাপড়ি ব্যবহার না করে একদম ভেতরের পাপড়ি ব্যবহার করুন। ব্যবহারের আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। তাজা ও শুকনো পাপড়ি দিয়ে চা তৈরি করা যায়। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক রেসিপিটি-

উপকরণ: গোলাপের পাপড়ি ১ কাপ, পানি ২ কাপ, মধু ১ টেবিল চামচ।

প্রণালী: গোলাপের পাপড়ি ফুটন্ত পানিতে দিয়ে জ্বাল দিন। দুই কাপ পানি কমে এক কাপ হলে নামিয়ে ফেলুন। স্বাদের জন্য এক টেবিল চামচ মধু দিতে পারেন।

আরএম-২১/১৩/১১ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)