খাবার চিবানোর শব্দ অসহ্য লাগে কেন?

খাবার চিবানোর

মানুষ ভেদে প্রত্যেককের পছন্দ-অপছন্দে থাকে ভিন্নতা ও বৈচিত্র। তবে কিছু উদ্ভট পছন্দ ও অপছন্দের ধরণ দারুণ অবাক করে। যেমন অনেকেই বইয়ের ঘ্রাণ পছন্দ করেন, আবার অনেকেই ধনিয়া পাতার ঘ্রাণ একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। এই ব্যাপারগুলো খুব সূক্ষ্মভাবে একজন মানুষের নিজস্বতাকে তুলে ধরে।

ঠিক এইভাবেই কিছু মানুষ জোরে শ্বাস নেওয়ার শব্দ, টেনে স্যুপ খাওয়ার শব্দ, সশব্দে চা পানের শব্দ বা জোরে চিবিয়ে খাবার খাওয়ার শব্দ একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। এই শব্দগুলোতে তারা অস্থির ও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এটা মোটেও কোন ভনিতা নয় এবং এই সমস্যাটি বহু মানুষেরই আছে। এমনকি বিজ্ঞান জানাচ্ছে এর পেছনে রয়েছে যথোপযুক্ত কারণও।

খাবার চিবানো, নিঃশ্বাসের শব্দ কিংবা পানি পানের শব্দে বিরক্ত হওয়াকে বলা হছে মিসোফোনিয়া (Misophonia). এটা মূলত এক ধরনের ব্রেইন অ্যাবনরমালিটি, যার ফলে উক্ত শব্দগুলো অসহ্যকর মনে হয়। ২০০১ সালে গবেষকেরা তাদের পরীক্ষার ভিত্তিতে এই টার্মটি প্রকাশিত করেন। যদিও মেডিক্যাল কমিউনিটিতে এটা নিয়ে বিতর্ক ছিল।

এদিকে কারেন্ট বায়োলজি নামক জার্নালে ২০১৯ সালের একটি গবেষণার তথ্য প্রকাশিত হয়। এই পরীক্ষার জন্য মার্কিন যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসেল ইউনিভার্সিটিতে মিসোফেনিয়া রয়েছে এবং এই সমস্যা নেই এমন দুই দল মানুষের মাঝে এমআরআই ব্রেইন স্ক্যান করা হয় এবং তাদের উপরে বৃষ্টির শব্দ, পানি ফোটার শব্দ, শিশুর কান্না, নিঃশ্বাস নেওয়ার শব্দসহ বিভিন্ন ধরনের শব্দ প্রয়োগ করা হয়।

পরীক্ষার ফল থেকে দেখা যায়- যাদের মিসোফোনিয়া সমস্যাটি আছে, কিছু ট্রিগার করার মতো শব্দে তাদের মাঝে সমস্যা দেখা দেয় এবং তাদের মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল লোবে পরিবর্তন দেখা যায়। এমনকি তাদের হার্ট বিটও অনেকখানি বেড়ে যায়।

নিউক্যাসেল ইউনিভার্সিটির নিউরোসায়েন্স বিভাগের ডা. সুখবিন্দর কুমার জানা, এটা একেবারেই নতুন একটি ব্যাপার এবং এর মাধ্যমে খুব সহজেই বোঝা যায়, যাদের এই সমস্যাটি আছে তাদের কতটা ভুগতে হয়।

আরএম-২৩/১৪/০১ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)