পুরুষের থেকে নারীরা ১০ গুণ বেশি সময় দেন ঘরের কাজে

সংসার থেকে শুরু করে ঘরের প্রায় প্রতিটি কাজ নারীরাই করে থাকেন। আর তাইতো ঘরের কাজে পুরুষের তুলনায় নারীরা দশ গুণের বেশি সময় দেন বলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

সোমবার ‘টাইম ইউজ সার্ভে ২০২১’ নামে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, পুরুষেরা ঘরের কাজে দিনে প্রায় ১ দশমিক ৬ ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন। গৃহস্থালি কাজ ছাড়াও এর মধ্যে আছে শিশু ও বৃদ্ধদের দেখাশোনার কাজ। অন্যদিকে, নারীদের এই কাজে সময় যায় প্রায় ১১ দশমিক ৭ ঘণ্টা।

তবে এ ধরনের কাজ অনুৎপাদনশীল হিসেবে গণ্য হওয়ায় এতে কোনো স্বীকৃতি বা মজুরি নেই। উৎপাদনশীল কাজ হিসেবে স্বীকৃত কাজে নারীদের ব্যয় হয় ১ দশমিক ২ ঘণ্টা। পুরুষদের ক্ষেত্রে এটা ৬ দশমিক ১ ঘণ্টা।

এ ছাড়াও ঘরের কাজ করা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে উভয়ের সমান দায়িত্ব হলেও নারীদেরকেই এর ভার বহন করতে হয়।

মজুরিবিহীন গৃহস্থালি কাজে ২৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সী নারীরা দিনে ব্যয় করেন ৫ দশমিক ২ ঘণ্টা। একই বয়স সীমার মধ্যে পুরুষরা এই ধরনের কাজ করেন শূন্য দশমিক ৬ ঘণ্টা।

শহর এলাকায় এ রকম কাজে নারীরা সময় ব্যয় করেন ৪ দশমিক ৪ ঘণ্টা ও পুরুষরা ব্যয় করেন শূন্য দশমিক ৬ ঘণ্টা। গ্রামীণ এলাকায় এ ধরনের কাজে নারীরা ব্যয় করেন ৪ দশমিক ৭ ঘণ্টা এবং পুরুষরা ব্যয় করেন শূন্য দশমিক ৬ ঘণ্টা।

যেসব নারীর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তারা ঘরের কাজে সময় দেন ৪ দশমিক ১ ঘণ্টা। প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি পার হওয়া নারীদের ক্ষেত্রে এই সময়টা ৪ দশমিক ৯ ঘণ্টা এবং মাধ্যমিক ও তার ওপরের শিক্ষা নেওয়া নারীদের ক্ষেত্রে এই সময়টা যথাক্রমে ৪ দশমিক ৯ ঘণ্টা ও ৪ দশমিক ৩ ঘণ্টা।

বিবিএসর সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত ৯৬ দশমিক ২১ শতাংশ বাড়িতে বিদ্যুৎ সুবিধা ছিল। এর মধ্যে রান্নার জন্য লাকড়ির চুলা ব্যবহৃত হয় ৪৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ বাড়িতে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৩২ দশমিক ৫২ শতাংশ শহরের ও ৫৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ গ্রামে বাস করেন।

সমীক্ষায় অংশ নেওয়াদের মধ্যে গ্রামের তুলনায় শহরে বসবাসকারীদের মধ্যে এলপি ও প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৭ গুণ বেশি।

সেই সঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭২ দশমিক ৭৪ শতাংশ ব্যক্তির মোবাইল ফোন কেনার সংগতি থাকলেও নারীদের মধ্যে মাত্র ৫৯ দশমিক ৯২ শতাংশের নিজের মোবাইল ফোন ছিল। অন্যদিকে, এ ক্ষেত্রে পুরুষের হার ৮৬ দশমিক ১ শতাংশ।

সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ২৮ দশমিক ০৬ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে পুরুষ ৩৫ দশমিক ১৫ শতাংশ ও নারী ২১ দশমিক ২৫ শতাংশ।

সমীক্ষার প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জেন্ডার সমতায় ‘মজুরিবিহীন গৃহস্থালি কাজ’ বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।

এসএইচ-০৭/১৪/২২ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)