সবারই চাওয়া- জীবনের সবগুলো দিন বন্ধুত্বের হোক। তাহলে আবার প্রশ্ন দেখা দিতে পারে বন্ধু দিবসের কী দরকার? কিন্তু না, বন্ধুত্ব আরও গাঢ় ও মধুর করে নেওয়ার জন্য একটি দিন থাকতেই পারে। ঠিক তেমনি একটি দিন আজ। বছর ঘুরে আগস্টের প্রথম রোববার পালন করা হয় বন্ধু দিবস।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, একজন মানুষের সারা জীবনে সঙ্গে গড়ে ৩৯৬ জনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত সব বন্ধু টিকে থাকে না, গড়ে টিকে থাকে ১২ জনের মতো।
বন্ধু দিবস কেমন করে এলো
গবেষকদের মতে, বন্ধুরা কাছাকাছি থাকলে মানুষের রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে এবং তা রোগ নিরাময়ে ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, বন্ধুকে জড়িয়ে ধরলে দুশ্চিন্তা কমে।
বন্ধুদের মধ্যে জিনগত মিল থাকে, এমনটাও জানা গেছে এক গবেষণায়। প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস সাময়িকীতে এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল। সেই গবেষণায় গবেষকরা ১ হাজার ৯৩২ জন মানুষের ওপর জরিপ চালান।
বন্ধুত্বের শুরুটা পৃথিবীর শুরু থেকে হলেও বন্ধু দিবস শুরুর ইতিহাস খুব একটা পুরোনো নয়। মাত্র এক শতক আগে এর প্রচলন হয়েছিল। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত-
বন্ধু দিবসের ইতিহাস
বন্ধু দিবসের পরিকল্পনা ও উৎপত্তি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯১৯ সালের আগস্ট মাসের প্রথম রোববার সর্বপ্রথম ‘বন্ধু দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়েছিল সেখানেই। এরপর তারা নিজেদের মধ্যে কার্ড ও উপহার বিনিময় করতো। বন্ধু দিবসের শুরুটা হয়েছিল এভাবেই।
আরেকটি প্রচলিত মত হলো, ১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এক ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ হয়েছিল। সেই ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন ওই ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। দিনটি ছিল আগস্ট মাসের প্রথম রোববার। বন্ধুর জন্য বন্ধুর আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে মার্কিন কংগ্রেস ১৯৩৫ সালের আগস্ট মাসের প্রথম রোববারকে ‘বন্ধু দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। যা পরবর্তীতে পালিত হতে থাকে। এরপর অনেক দেশই বন্ধু দিবস পালন করা শুরু করে।
বন্ধুত্ব উদযাপনের দিন কবে?
বন্ধু দিবস ছাড়াও রয়েছে বন্ধুত্ব উদযাপনের দিন। তা হলো আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস। আর সেই দিনটি হচ্ছে ৩০শে জুলাই।
বহু বছর আগে ১৯৫৮ সালে প্যারাগুয়েতে প্রথম এই দিনটি সেলিব্রেট করা হয়। এই দিবস উদ্যাপনের ব্যাপারটিতে মোড় ঘুরিয়ে দেন প্যারাগুয়ের চিকিৎসক র্যামন।
চিকিৎসক রামন আর্টেমিও ব্রাকো ২০শে জুলাই তার বন্ধু পুয়ার্ত পিনাস্ক এর সঙ্গে প্রথম ডিনার করে এই দিনটি পালন করেন। তারপর ডাক্তার রামন আর্টেমিও ব্রাকোই ১৯৫৮ সালে প্রথম ৩০শে জুলাই প্রস্তাব রাখেন ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেডের। এরপরই বিশ্বব্যাপী ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে বন্ধুত্ব, ঐক্য ও ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে গঠন করা হয় ‘বন্ধুত্ব ক্রুসেড’।
পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান ৩০ জুলাইকে আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস ঘোষণা করেন। জাতিসংঘ জুলাইয়ের ৩০ তারিখ বন্ধু দিবস পালন করলেও অনেক দেশে এই দিনটি বিভিন্ন তারিখে পালন করা হয়।
এসএ-০৯/০৬/২৩ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)