নতুন মন্ত্রীসভা নিয়ে যে যা বললেন

আগের মন্ত্রিসভার ৩৬ জনকে বাদ দিয়ে তুলনামূলক নবীনদেরকে নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করে চমক সৃষ্টি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এবার মহাজোটের শরিক দলের কোনও নেতাকে মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি। নতুন এই মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন শুধু আওয়ামী লীগ নেতারাই। নবীনদের নিয়ে গড়া এই মন্ত্রিসভা কেমন হল সেসব বিষয়ে কথা বলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা?

সৈয়দ আবুল মকসুদ, কলামিস্ট

মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীর সমন্বয়ে যে মন্ত্রিসভা হয়েছে তার আকারটা বেশ ভালো। মন্ত্রিসভার আকার এর চেয়ে বড় না হলেই ভালো।

তিনি বলেন, নতুন মন্ত্রিসভায় নতুনদের স্থান হবে, এটাই স্বাভাবিক। নতুনদের অনেকেই জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত নন। তবে তারা যদি সর্বোচ্চ নিষ্ঠা, সততা, দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে জনগণ উপকৃত হবে।

সুলতানা কামাল, মানবাধিকারকর্মী

নবীনদের নিয়ে গড়া নতুন মন্ত্রিসভা সম্পর্কে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, তরুণদের নিয়ে গড়া মন্ত্রিসভা আশাব্যঞ্জক বটে। তারা পৃথিবীকে নতুনভাবে দেখেন। এই অর্থে তাঁরা নতুন চিন্তাভাবনা নিয়ে আসবেন। তারা পরিবর্তন হয়ে যাওয়া উন্নয়নের পর্যায়ক্রমিক ধারাগুলোর সঙ্গে তাঁরা নিজেদের অনেক সহজে খাপ খাওয়াতে পারেন। এসব কারণে তাঁদের সুযোগ থাকে প্রচুর। তবে যেহেতু তাঁদের আগে কখনো এ রকম দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি, তাই একটা ভাবনাও থাকে, তাঁরা কেমন ভূমিকা রাখবেন।

পুরোনোদের মধ্যে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের কয়েকজন তো ভালো। সেই সময় তাঁরা ভালো ভূমিকা রেখেছিলেন, এখনো ভালো ভূমিকা রাখবেন বলে আশা রাখি। কয়েকজন সম্পর্কে প্রশ্ন ছিল, তাঁরা কোন বিবেচনায় এলেন? তবে প্রধানমন্ত্রী আগেও বলেছেন, অতীতের ভুলগুলো শুধরে ওঠার চেষ্টা করবেন।

সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নতুনদের কাজ শেখানোর জন্যে প্রবীণদের জায়গা ছেড়ে দিতে হয় মন্তব্য করে মন্ত্রিসভায় দীর্ঘদিনের পরিচিত মুখ যারা বাদ পড়েছেন তাদের প্রসঙ্গে এই গবেষক বলেন, প্রবীণরাতো অনেকদিন ছিলেন, এখন নবীনদের জন্য জায়গা ছেড়ে দেয়ার সময়।

মন্ত্রিসভা হওয়া উচিত কর্মিসভা। কর্মীদের কাজ আগে দেখতে হবে। তারপর মন্তব্য করতে হবে। তিনি বলেন, মন্ত্রিসভার সবাইকে কর্মী হতে হবে, কর্ম করতে হবে। জনগণের জন্য নিবেদিত হতে হবে। ক্যামেরাবাজি করলে হবে না। মনে রাখতে হবে, দল নয়, সব মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে তাদের।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি পরিবর্তনের ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটেছে এই মন্ত্রিসভায়।

তিনি বলেন, “একটা জিনিস খেয়াল করুন এই মন্ত্রিসভায় যারা আছেন তারা প্রত্যেকেই শেখ হাসিনার থেকে বয়সে ছোট। দুটো জিনিস খুব পরিষ্কার যে তিনি তরুণদের হাতে মন্ত্রীত্বের অধিকাংশ দিয়ে তিনি একটা নতুন শুরুর চেষ্টা করছেন।”

তার মতে, “বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারকে যে সমস্ত উন্নতি করতেই হবে, সেটা ইশতেহার অনুযায়ী হোক আর মানুষের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী হোক, অথবা নির্বাচন যেটা অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে নানা কারণে, এই নির্বাচন যে সরকারের দুর্বলতার প্রতিফলন করে না সেটা প্রমাণ করার জন্যই হোক, অনেক কারণে তাদের উন্নয়নের এবং গতিশীলতার, স্বচ্ছতার, জবাবদিহিতার পরিমাণটা বাড়াতে হবে। সেই কারণে হয়ত এমন নতুন যাত্রার সূচনা।”

এসএইচ-২২/০৯/১৯ (অনলাইন ডেস্ক, তথ্য সূত্র : পূর্ব-পশ্চিম)