দুই বাংলা ভাষাসূত্রের বন্ধনে

প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে ঢাকা সাইকেল চালিয়ে যান একদল৷ বাংলা ভাষার প্রতি ভালবাসা জানিয়ে আসতে, ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শহীদ মিনার চত্বরে৷

শুরুটা হয়েছিল ২০১২ সালে, অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় একদল যুবকের কলকাতা থেকে ঢাকা সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার উৎসাহ দিয়ে৷ ২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঢাকার শহীদ মিনারের উদযাপন দেখে তাঁরা মুগ্ধ হয়ে যান৷ পরের বছর থেকে আরও পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি নিয়ে সাইকেল চালিয়ে ঢাকা যান তাঁরা৷ সেবার তাঁদের সাইকেলে ছিল বর্ণময় পোস্টার, ছবি৷

কলকাতা-ঢাকা এই সাইকেল যাত্রা সম্বন্ধে লোককে সচেতন করতে৷ সেইসব দেখে এগিয়ে আসেন পথের দুপাশের মানুষ, ওঁদের সঙ্গে আলাপ করতে৷ ওই অপরিচিত মানুষজনের থেকে যে ভালবাসা পান ওঁরা, বিশেষত বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে ওঁদের আদর করে বুকে টেনে নেন, তা ফের ওঁদের অন্যভাবে ভাবায়৷ সূচনা হয় ভাষাসূত্রের, যে বন্ধনে যুক্ত হয় দুই বাংলা৷ প্রতিবছর, ১৪ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি৷

ভাষাসূত্রের এই যাত্রা আট বছরে পা দিল এবার৷ এই আট বছরে ওঁদের পরিচিতি এবং যোগাযোগ আরও বেড়েছে৷ বাংলাদেশ এবং ভারত, দুই দেশেই প্রশাসনিক পর্যায়ে এখন সহযোগিতা পান ওঁরা৷ সাইকেল যাত্রার সঙ্গে আরও নানা বিষয়, বার্ষিকী, উদযাপনের নানা অনুষঙ্গ যুক্ত হয় এখন৷

এবছর যেমন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবর্ষ এবং শেখ মুজিবুর রহমানের শতবর্ষেরও উদযাপন করছেন ওঁরা৷ জানালেন ভাষাসূত্রের এই উদ্যোগের আহ্বায়ক স্বরজিৎ রায়৷ ওদের সাইকেলেও ভারত, বাংলাদেশ, দুই দেশের পতাকার পাশাপাশি সেজেছে বিদ্যাসাগর আর শেখ মুজিবের ছবিতে৷

কারা আছেন এবারের দলে?‌স্বরজিৎ জানাচ্ছেন, প্রতি বছরের মতো এবারও সাইকেল চালিয়ে ঢাকা যাবেন নানা পেশার, নানা পরিচয়ের মানুষ৷ তাঁদের মধ্যে যেমন কলেজের ছাত্র আছেন, তেমনি আছেন ব্যস্ত ডাক্তার, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী৷

শুক্রবার বেলা ১১টায় কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি নিজে প্যাডেলে চাপ দিয়ে সূচনা করলেন এই সাইকেল যাত্রার৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আগেই পাঠিয়েছিলেন শুভেচ্ছাবার্তা৷ সাইকেল আরোহীরা মুখিয়ে ছিলেন, আবার একবার তাঁদের পথের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে বলে৷ গত আট বছরে সীমান্তের এপারে ওপারে যে বন্ধুত্ব তাঁরা গেঁথেছেন বাংলা ভাষার সূত্রে৷

এসএইচ-০৫/১৭/২০ (শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডয়চে ভেলে)