৩৮ দেশে ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পরও উদাসীন বাংলাদেশ

বিশ্বের ৩৮টি দেশে ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পরও উদাসীন বাংলাদেশ। কোভিড-১৯ এর ধাক্কার পরও টনক নড়ছে না নীতি-নির্ধারকদের। এবার ওমিক্রনকেও পাত্তা না দেওয়ার মনোভাব পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যেই ইঙ্গিত দেয়।

করোনা মহামারি শুরুর বেলায়ও ঠিক একই অবস্থা হয়েছিল। তখনও নীতিনির্ধাকরা বেশ আস্থার সঙ্গেই আশ্বাস দিতে চেয়েছিলেন, কোভিড নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশে কোভিড আসা-না আসা নিয়েও অভয়বাণী শোনাতে কার্পণ্য ছিল না তাদের।

বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ জাগানিয়া কোভিডের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মন্তব্য মনে করিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রায় ২২ মাস আগের একটি বক্তব্যকে। গত বছরের ২২ জানুয়ারিতে বেশ জোর গলায়ই কোভিড-১৯ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আশা প্রকাশ করেছিলেন, বাংলাদেশে আসবে না কোভিড-১৯।

পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সেই বক্তব্যের ঠিক দেড় মাসের মাথায় জানা যায়, দেশে প্রথম কোভিড-১৯ শনাক্তের কথা। পরের কথা সবারই জানা। গত পৌনে দুই বছরে দেশে কোভিড শনাক্ত ১৬ লাখের কাছাকাছি। আর প্রাণহানি ২৮ হাজার ছুঁই ছুঁই। কোভিডের তিনটি ঢেউয়ে অসহায় ছিল সাধারণ মানুষ। সামনে ওঠে আসে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার করুণ চিত্র। কোভিডের দাপটে ভুগেছে অর্থনীতি।

বর্তমানে দৈনিক শনাক্তের হার যখন নেমে এসেছে এক শতাংশের ঘরে, প্রাণহানিও এক অংকে, তখনই বিশ্বজুড়ে নতুন উদ্বেগ ওমিক্রন। দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়া অতি সংক্রামক এ ভ্যারিয়েন্ট বিস্তার এখন প্রতিবেশি ভারতসহ প্রায় ৪০ দেশে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনো গবেষণার পর্যায়ে থাকলেও ওমিক্রনকে অবহেলা/উপেক্ষা কোনো সুযোগ নেই। বিমান কিংবা স্থলবন্দর সবখানেই অন্য দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের র‌্যাপিড টেস্ট করানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। একই জোর দিচ্ছেন হাসপাতালের আগাম প্রস্তুতি আর অমিক্রম শনাক্তে জিনোম সিকোয়েন্সের ওপর।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রিদওয়ানউর রহমান বলেন, আমাদের প্রাথমিক রোগ নির্ণয় ও আইসোলেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের টেস্টিং সক্ষমতা দেশব্যাপী বাড়িয়ে দিতে হবে। ওমিক্রনের জন্য যদি একটা অ্যাকশন বলেন, সেটা হবে বিমানবন্দরে এবং স্থলবন্দরে র‍্যাপিড টেস্টটা চালু করে সবাইকে স্ক্রিনিং করা।

যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ওমিক্রন সতর্কতায় আক্রান্ত দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতে কঠোর অবস্থানে সরকার।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, কোভিড টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া কেউ বাংলাদেশে ঢুকতে পারবে না। এটা খুব কঠিনভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। এপি সেন্টার থেকে কেউ আসা মাত্র টেস্ট করা থাকুক বা না থাকুক তাদের কোয়ারেন্টাইন এ যেতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিডের যেকোনো ধরনের বিস্তার প্রতিরোধে সবার টিকা নিশ্চিত আর স্বাস্থ্যবিধির মানার কোনো বিকল্প নেই।

এসএইচ-২৬/০৪/২১ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : সময়)