‘জিয়া অস্ত্র উঁচিয়ে বললেন, সাইন ইট, আমি কোনোমতে সই করে বাঁচলাম’

অনেক অজানা ইতিহাস দীর্ঘদিন ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল বিএনপি। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ কথা জানান।

এ সময় তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের ‘অ্যাট বঙ্গভবন: লাস্ট ফেজ’ বইটির খণ্ডাংশ তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে এ-সংক্রান্ত এক মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের একটি এনিমেটেড ভিডিও প্রকাশ করেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের ‘অ্যাট বঙ্গভবন: লাস্ট ফেজ’ বইটি প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার ৭ দিনের মধ্যে বইটি বাজেয়াপ্ত এবং নিষিদ্ধ করা হয়।

‘আমি কোনোমতে সাইন করে জীবন বাঁচালাম’౼এ কথাটি রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের। তার লেখা ‘অ্যাট বঙ্গভবন: লাস্ট ফেজ’ বই থেকে অনেক অজানা ইতিহাস জানা যায়, যা বিএনপি দীর্ঘদিন ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল বলে স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

তিনি বলেন, বইটি থেকে আরও জানা যায়, রাষ্ট্রপতি সায়েমের একটাই দুঃখ ছিল যে, তিনি বাংলাদেশে নির্বাচন করে জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে যেতে পারেননি।

এনিমেটেড ভিডিও প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রযুক্তিবিষয়ক এ উপদেষ্টা বলেন, ‘তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়া কীভাবে অস্ত্রের মুখে বাংলাদেশের সংবিধানকে অগ্রাহ্য করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল, তা জানতে পারবেন এই ছোট এনিমেটেড ভিডিও থেকে। জিয়া রাষ্ট্রপতি সায়েম সাহেবকে কথাও দিয়েছিল, সে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু সে নির্বাচনে জিয়া সামরিক বাহিনীর প্রধান ও সামরিক আইন প্রশাসকের পদে থেকে নিজেই নিজেকে হ্যাঁ-না ভোট আয়োজন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে, যা জাতির সাথে সত্যিই এক বড় রকমের তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের বইয়ের নিচের খণ্ডাংশ তুলে ধরেন জয়: “জিয়া বঙ্গভবনে আসতেন মধ্যরাতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে, তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা অস্ত্র উঁচিয়ে রাখত।

আমি প্রায়ই মনে করতাম এটাই বোধহয় আমার শেষ রাত। সংবিধানের ৪টি মূল স্তম্ভ বাতিল সংক্রান্ত একটি সামরিক ফরমান আমার কাছে স্বাক্ষরের জন্য আসে। আমি ওই ফরমানে স্বাক্ষর না করে, তা রেখে দেই।

পরদিন রাত ১১টায় বুটের শব্দে আমার ঘুম ভাঙে। সেনাপ্রধান জিয়া অস্ত্রশস্ত্রসহ বঙ্গভবনে আমার শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। জিয়াউর রহমান আমার বিছানায় তার বুটসহ পা তুলে দিয়ে বলেন, সাইন ইট। তার এক হাতে ছিল স্টিক, অন্য হাতে রিভলভার।

আমি কাগজটা পড়লাম। আমার পদত্যাগপত্র। যাতে লেখা: ‘অসুস্থতার কারণে আমি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’ আমি জিয়াউর রহমানের দিকে তাকালাম। ততক্ষণে আট-দশজন অস্ত্রধারী আমার বিছানার চারপাশে অস্ত্র উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জিয়া আবার আমার বিছানায় পা তুলে আমার বুকের সামনে অস্ত্র উঁচিয়ে বললেন, ‘সাইন ইট’। আমি কোনোমতে সই করে বাঁচলাম।’”

এসএইচ-১৩/২৫/২২ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : সময়)