দেশজুড়ে ‘জাল টাকার ১৫ কোম্পানি’র রমরমা ব্যবসা

কোম্পানি বানিয়ে জাল টাকার ব্যবসা। সারা দেশে সক্রিয় এমন ১৫টি কোম্পানি। প্রতি মাসে তারা বাজারে ছাড়ছে ১৫ কোটি টাকার ভুয়া নোট। গোয়েন্দা জালে মালিকসহ ৩ জন। এক কোটি টাকার জাল নোটসহ তিনজনকে গ্রেফতারের পর গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে এমন তথ্য।

দেখতে আসল টাকা মনে হলেও টাকাগুলো আসলে জাল। এক লাখ দুই লাখ নয়, এক কোটি পঁচিশ হাজার টাকা। রাজধানীর তেজগাঁও ও গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে বিপুল সংখ্যক জাল টাকা উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে তিনজনকে।

এ চক্রটির প্রধান মজিবুর রহমান। দীর্ঘ এক যুগ ধরে তিনি জাল টাকার কারবারে জড়িত। তার মতে, জাল টাকার ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কোম্পানিতে ভাগ হয়ে কাজ করে। মজিবুরও একটি কোম্পানির মালিক। সারা দেশে এরকম কোম্পানি আছে ১০ থেকে ১৫টি। মাসে প্রতিটি কোম্পানি ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি জাল টাকা বাজারে ছাড়ে।

জাল টাকার কোম্পানিগুলো আবার কয়েকটি স্তরে ভাগ হয়ে কাজ করে। কারখানায় কাজ করে তিন ধরনের লোক। যাদের কাজ কাগজ বানানো, প্রিন্ট ও কাটিং করা। মার্কেটিং বিভাগের মাধ্যমেই মূলত পাইকারী ও খুচরা কারবারির হাত হয়ে জাল টাকা ছড়িয়ে পড়ে বাজারে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, তারা প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ লাখ জাল নোট তৈরি করেন। অন্যদিকে আরেকটা চক্র মার্কেটিং করে। তারা চুক্তি করেন। এমন হয় যে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে হয়তো ১ লাখ টাকা কেনা হয়। ওই ১০ হাজার টাকা কিন্তু জাল না। অর্থাৎ ১ লাখ জাল নোটের বিনিময়ে জেনুইন ১০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়া। ওই এক লাখ টাকা নিয়ে তারা তাদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বা কোনো কিছু কেনার নামে টাকাটা খরচ করেন। অনেক ক্ষেত্রে ওই এক লাখ টাকা আবার বিক্রি হয় ২০ হাজার টাকায়। এভাবেই টাকাটা মার্কেটিং হয়ে বণ্টন হয়।

পুলিশ বলছে, বিভিন্ন উৎসব সামনে রেখে জাল টাকার কারবারিরা সরব হলেও বছরব্যাপীই চলতে থাকে টাকা ছাপানোর কাজ।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, বিভিন্ন উৎসব ঘিরে কেনাকাটার সময় হলে এই নোটগুলো তারা বাজারে ছাড়েন। ওই সময় বিভিন্ন মার্কেটিং কোম্পানিগুলোর কাছে টাকাগুলো বিক্রি করা হয়। আর সেই টাকাগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এই চক্রের ৩ সদস্যকে আমরা গ্রেফতার করেছি। তারা স্বীকার করেছেন যে বহুদিন ধরেই এই জাল টাকার মেশিন এনে তারা নকল টাকা বানাচ্ছেন। অন্যদিকে তাদের এক গ্রুপ মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় জাল টাকাগুলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে একদিকে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে তাদের মাধ্যমে অনেক টাকা বাহিরেও পাচার হচ্ছে।

পাঁচশো ও এক হাজার টাকার নোট লেনদেনের সময় সতর্ক থাকার পরামর্শ পুলিশের।

এসএইচ-১৮/১৬/২২ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : সময়)