দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছে না। বড় দুই দলের অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে রাজনৈতিক সমীকরণ। নির্বাচন নিয়ে আসলেই কি রাজনৈতিক মীমাংসা হবে? নাকি সংকট আরও ঘনীভূত হবে?
এদিকে, বিগত দুইটি জাতীয় নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে রয়েছে বিতর্ক। তাই সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে চাপ বাড়ছে পশ্চিমা পরাশক্তিগুলোর।
রাজনীতি বিশ্লেষকদের মত, আলোচনায় সমাধান না এলে রক্তপাত বা সহিংসতা এড়ানো কঠিন। রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া বিদেশি শক্তিগুলোর কোনো ফর্মুলাই দীর্ঘমেয়াদে কাজে আসবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, শুধু বাংলাদেশে না, পৃথিবীর যে সমস্ত দেশে বাইরের কোনো রাষ্ট্রকে দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে, তা ব্যর্থ হয়েছে। বিদেশিদের ভূমিকায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারাবাহিকতা ফিরে আসবে তা মনে হয় না। তাহলে তো দেশের এ অবস্থা হয় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন বলেন, মার্কিন ভিসানীতি পরিবর্তন করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও তাদের আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছে, বাংলাদেশে তারা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়।
গণতন্ত্রে শক্তি প্রয়োগের চেয়ে আলোচনা বা সংলাপকে বেশি কার্যকর বলে মনে করা হয়। কিন্তু সংলাপ নিয়ে বড় দলগুলোর পূর্বের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। বর্তমান বাস্তবতায় তেমন কোনো লক্ষণও নেই আলোচনার। তবে কি রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে রাজপথের সহিংসতা অনিবার্য?
অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, বরফটা জমতে জমতে এমন অবস্থায় চলে গেছে, আর গলবে না। বরফটা গলানোটাই হচ্ছে এখন মূল। দিনশেষে যদি কোনো পক্ষকে এখন রাজপথ বেছে নিতে হয়, তাহলে এটি তো আমাদের জন্য ক্ষতিকর। এ নিয়ে দ্বিমত হওয়ার কারণ নেই।
অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন বলেন, যে প্রসঙ্গে সংলাপ হবে, তা থেকে আমরা কী নতুন কিছু পাবো? নতুন করে সমাধান পাবো? আমি মনে করি, বর্তমান বাস্তবতায় তা সম্ভব না। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করা এবং সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ করার দায়িত্ব কিন্তু সরকারকে নিতে হবে। সংলাপ না হওয়া বা মতানৈক্যে না পৌঁছানো একভাবে সহিংসতাকে আমন্ত্রণ করছে।
বিশ্লেষকরা এ-ও বলছেন, বিগত দুইটি নির্বাচনের মতো এবারও একই পরিস্থিতি হলে আরও সংকটে পড়বে গণতন্ত্র।
এসএইচ-০১/০৩/২৩ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : যমুনা টিভি)