নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার কারণ জানালেন ড. কামাল

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনার জবাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, এতে কোনো রহস্য নেই। নির্বাচনে অংশ না নিলেও নিজের কাজ থেকে সরে যাবেন না তিনি।

আজ শনিবার বেলা তিনটায় রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এখানে কোনো রকমের রহস্যের ব্যাপার নেই। আমার বয়স ৮০ বছর। আমার সমবয়সী যাঁরা বঙ্গবন্ধুর কেবিনেটে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে শেষ ব্যক্তি আমিই বেঁচে আছি।

এতগুলো যোগ্য ব্যক্তি রাজনীতি করে বেরিয়ে এসেছেন। নেতৃত্বের কোনো ঘাটতি হবে না। কিন্তু আমি কাজ থেকে সরে যাচ্ছি না।’ তিনি আরও বলেন, নির্বাচন না করাটা তাঁর আজকের সিদ্ধান্ত না। ২০০৮ সালেও তিনিও নির্বাচনে অংশ নেননি।

নির্বাচন না হওয়ার জন্য নানা রকম ষড়যন্ত্র চলছে, আওয়ামী লীগের নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন তিনি ‘ষড়যন্ত্র’ শব্দে বিরক্ত।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যদি ক্ষমতায় যায় তবে শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তনসহ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, নতুন করে কিছু করতে হবে না। সংবিধানকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে।

তত্ত্বাবধায়ক প্রসঙ্গে বলেন, তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এটা কোনো বিতর্কিত বিষয় না, সংবিধানের ব্যাখ্যার বিষয়। তিনি আশা করেন, জনগণের সমর্থন তাঁদের আছে। জনগণের আস্থা অর্জন করে তাঁরা সংবিধান মেনে চলবেন। প্রয়োজন হলে সংবিধান সংশোধনও করা হবে।

৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগ পর্যন্ত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সতর্ক ও সংঘবদ্ধ থাকবে এবং সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে জানান জোটের শীর্ষ নেতা।

সংবাদ সম্মেলনে কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্য পড়েন জোটের আরেক নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। সেখানে দলীয় আনুগত্য ও ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। পোলিং এজেন্টরা যাতে নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সে পরিস্থিত তৈরি করার জন্যও বলা হয়।

দেশবাসীকে ১৯৭১ সালের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আগে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া আগামীকাল ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সব আসনেই প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে।

কামাল হোসেন বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন সরকারের দয়া-মায়া বা অনুগ্রহের বিষয় না, এটা সংবিধানের প্রতিশ্রুতি। দেশের মানুষের প্রতি নিবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। পাড়া-প্রতিবেশী সবাইকে নিয়ে সকাল-সকাল ভোট দিতে হবে।

তফসিল ঘোষণার পরে এখন পর্যন্ত ৬৮১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাঁদের মধ্যে তিনজন প্রার্থী রয়েছেন বলে জানান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন গ্রেপ্তার–হয়রানি করা হবে না। কিন্তু তা পালন করা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কাদের সিদ্দিকী, সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, রেজা কিবরিয়া প্রমুখ।

বিএ-০৫/০১-১২ (ন্যাশনাল ডেস্ক, তথ্যসূত্র: প্রথম আলো)