খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেছেন, খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তা যে আদেশ দিয়েছেন আইনের দৃষ্টিতে তা বৈধ নয়, এটা অবৈধ।

আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশন তা অনুধাবন করতে পারছেন। বিকেলে যথাযথ ও আইনগত আদেশ দেবেন। আশা করি বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

গত ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্রের যাচাই বাছাই শেষে খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্রই বাতিল ঘোষণা করেন ফেনী ও বগুড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তারা। পরে ৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার পক্ষে ফেনী-১ আসনের জন্য ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বগুড়া-৬ আসনের জন্য ব্যারিস্টার নওশাদ জমির এবং বগুড়া-৭ আসনের জন্য অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আপিল আবেদন জমা দেন।

শনিবার সেই আপিল আবেদনের ওপর নির্বাচন কমিশনের আপিল বিভাগে শুনানির দিন ধার্য ছিল। শুনানি শেষে দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

জয়নুল আবেদীন বলেন, আর্টিকেল ১২/১ ঘ অনুসারে খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছিল। আমরা শুনানিতে বলেছি, রিটার্নিং কর্মকর্তা যে কারণ দেখিয়েছেন, ওই আইন অনুসারে বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল সঠিক হয়নি। কিন্তু সেটাই করা হয়েছে। আমরা সেসব কারণে আপিল করেছি।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে আমরা আইনের বিস্তারিত দিক তুলে ধরেছি। নির্বাচন কমিশন সব শুনে অন্যান্য মামলার মতো এ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি। তারা বলেছেন, এ ব্যাপারে তারা বিকেল ৫টার দিকে তাদের মতামত ও সিদ্ধান্ত জানাবেন।

জয়নুল আবেদীন বলেন, সাংবিধানিক অধিকার প্রত্যেকটি নাগরিক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে বেগম জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার কোনো সুযোগ নাই। আইনগতভাবেই খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

তিনি বলেন, ১২/১ ঘ’-তে নির্বাচন সংক্রান্ত অপরাধের কথা লেখা রয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে অপরাধী হলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। নির্বাচনী প্রক্রিয়া তো এখনও শুরুই হয়নি। এখনও খালেদা জিয়া মার্কা নিয়ে রাস্তায় নামেননি। তাহলে নির্বাচন-সংক্রান্ত অপরাধ করার সুযোগই তৈরি হয়নি। সুতরাং বেগম খালেদা জিয়া এমন কোনো অপরাধ করেননি যে নির্বাচন-সংক্রান্ত বিধান দিয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল করা যায়।

কমিশন কি তাদের কোনো কনফিউশনের কথা বলেছেন, যেটি আরও পর্যবেক্ষণের দরকার রয়েছে? -এমন প্রশ্নের জবাবে খালেদার আইনজীবী বলেন, না, এমন কিছু তারা বলেননি। এখন প্রসেস হচ্ছে ভেরি ইনিসিয়েল স্ট্যাজ। এ অবস্থায় রিটার্নিং কর্মকর্তা কি আদেশ দিয়েছেন শুধু সেটার উপরই নির্বাচন কমিশন আদেশ দিতে পারবেন। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি আরো বলেন, মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেছেন- ১২/১-এর ‘ঘ’ অনুসারে মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। সেখানে যেসব সেকশন রয়েছে সেসব কানেক্টেড নির্বাচনী আচরণ-সংক্রান্ত।

এ ছাড়াও উদাহরণ দিয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, নির্বাচনের মাঠে কেউ যদি কোনো অপরাধ করে যেমন- আমি মনোনয়নপত্র দাখিল করলাম, নির্বাচনী প্রসেস শুরু হলো, কাউকে মারধর করলাম, কাউকে গুলি করলাম, ভোট কেন্দ্রে অরাজক অবস্থা তৈরি করে আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলাম- এসব ক্ষেত্রে নির্বাচন-সংক্রান্ত বিধিতে মনোনয়নপত্র বাতিল করা যায়। এখনো সে অবস্থাই তৈরি হয়নি।

বিএ-০২/০৮-১২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)