ইসি জানে না ড. কামালের ওপর হামলা হয়েছে : আলাল

গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দাবি জানিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। জোটের পক্ষ থেকে বিএনপির যুগ্ম-মহাসিচব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল শনিবার ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের কাছে এ সংক্রান্ত লিখিত দাবি জানায়।

ইসি সচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের পর আলাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব জায়গায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। এই তিন বাহিনীর মোকাবেলা করা আমাদের কাজ নয়। আমাদের কাজ হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়া। এই তিন বাহিনীকে মোকাবেলা করতে তো আমরা পারব না। তারা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এগুলো করছেন।’

তিনি বলেন, শুক্রবার সারাদেশে বিভিন্ন আসনে যে হামলা ও সহিংসতা হয়েছে, সে বিষয়গুলো আমরা ইসিকে জানিয়েছি। আক্রমণ বন্ধ করতে ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করছি।

বিএনপির এ নেতা বলেন, যে পুলিশের দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়ে আক্রমণ থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি, সেই পুলিশের বিরুদ্ধে আমরা যত অভিযোগ করেছি, সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে একজন পুলিশকেও বদলি বা ক্লোজ করা হয়নি। এ কথাগুলো আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছি। আমরা বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছি। কিন্তু তারা তো এই সুযোগে দ্বিগুণ উৎসাহে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে।

তিনি বলেন, সাবেক নির্বাচিত সংসদ সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদের স্ত্রী ও বিএনপি প্রার্থী রোমানা মাহমুদের নির্বাচনী প্রচারণায় গুলি করা হয়েছে। তিনি (রোমানা) আহত এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। তার কর্মীরাও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আমরা মামলা করতে গিয়েছি, পুলিশ মামলা নেয়নি। এখন পর্যন্ত অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু দাউদকে প্রত্যাহার করতে বলেছি।

আলাল বলেন, বড় কিছুই চাইনি নির্বাচন কমিশনের কাছে। তাদের ক্লোজ করার জন্য বলেছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কয়েকদিন আগে বললেন, নির্বাচনের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। আমরা তো জীবন নিয়েই বাঁচতে পারছি না।

তিনি আরো বলেন, ড. কামাল হোসেনের ওপর হামলার বিষয়ে ইসি সচিব বলেছেন, উনারা নাকি অবহিতই না। এটা খুব আশ্চর্য় লাগে আমাদের কাছে। খুব কষ্ট লাগে। এটা আমাদের কাছে খুব বিস্ময়কর লাগে। এটা কীভাবে সম্ভব।

তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন সচিব বলেছেন, উনারা জানতেন না এবং টিভিতেও দেখতে (ড. কামালের ওপর হামলা) পারেননি। পরবর্তীতে উনারা ঘটনাটি শুনেছেন অফিস আওয়ারের পর। উনারা কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেননি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, (অন্য জায়গায় বলেছেন) তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলাল বলেন, ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ যদি প্রচণ্ডভাবে সরকারের প্রতি অনুগত থাকে, সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য নিজেরা সাবোটাইজ করে, প্রতিপক্ষের ওপর চাপিয়ে দেয়। এখন সেটা সেটা নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত স্পর্শ করেছে কি না, সেটা তো একটা প্রশ্ন থেকে যায়। না হলে একই সুরে কথা তো আমরা আশা করি না। এতো মারপিটের পরও আমরা মাঠে আছি। আমরা ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকব। এ ধরনের কথায় আমরা হতবাক, বিস্মিত হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আপনারা জেনেছেন, আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে জাতীয় ঐকফ্রন্টের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎ করার জন্য চিঠি দিয়েছি। কেননা, নির্বাচন কমিশন আমাদের বক্তব্য শুনেন। কিন্তু প্রতিকার তো পাই না। তাই সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে আমরা উনার কাছেও বলব। তাও কাজ না হলে জনগণের কাছে বিচারের দাবি ছেড়ে দেব।

এ সময় বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসেনর উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালি উপস্থিত ছিলেন।

এসএইচ-১৫/১৫/১২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)