নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবীর বলেছেন, এই দল বা সেই দলের পক্ষাবলম্বী বুদ্ধিজীবীরা তিন-চার-পাঁচজন করে প্রতিদিন টেলিভিশনে নানাকিছু জনগণকে বোঝাচ্ছে। তারা জনগণের চিন্তার মান এবং স্বাভাবিক বুদ্ধিবৃত্তিকে অপমান করছে। এই সাধারণ মানুষগুলো আসলে এসব বুদ্ধিজীবীদের গালাগাল দেয়, বুদ্ধিজীবীরা সেটি বুঝতে পারে না।
শুক্রবার চ্যানেল আই তৃতীয় মাত্রায় তিনি আরো বলেন, বুদ্ধিজীবীরা মনে করছে, তারা কঠিন কঠিন কিতাবের নাম উল্লেখ করে বক্তব্য দিচ্ছে আর যাদেরকে তারা গরীব, অশিক্ষিত ভাবে তারা বুঝি তাদের কথাগুলো একেবারে কাপকাপ গিলছে। না, খায় না। মানুষ ভীষণ ক্ষেপে আছে।
তিনি বলেন, ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ দেখছেনা বলে সাধারণ মানুষ খুবই ক্ষিপ্ত। এই মুহূর্তে দেখেই মনে হচ্ছে, সরকারি বড় এজেন্ডা হলো-সাধারণ মানুষ যেনো ভোট না দিতে পারে, তার জন্যই যেনো সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছে। কিন্তু আগামি এক দুই দিনে কী হয় সেটা দেখার বিষয়। তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্রপরায়ণ প্রতিটি নাগরিকের জন্য বেদনাদায়ক একটি অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনগণের রায়টা বাস্তবায়িত হয়নি বলেই এবং গণতান্ত্রিক অধিকার পদদলিত হয়েছিলো বলেই সংগ্রাম শুরু হয়েছিলো।
নুরুল কবির বলেন, দলকানা লোকজন ছাড়া লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে, এটি কেউ দাবি করে না। মানুষ আশা করেছিলো, নির্বাচনের সিডিউলের পরে অন্তত সমানভাবে সবাই তৎপরতা চালাতে পারবে। অর্থাৎ ১০ ডিসেম্বর থেকে। কিন্তু শতশত অপোজিশন নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হলো। জেলগুলোতে যেখানে ৩৬ হাজার কেপাসিটি, এই মুহূর্তে সেখানে ৯৫ হাজার বন্দী আছে।
শুধুমাত্র গত এক সপ্তাহে নতুন সাড়ে ৪ হাজার গ্রেফতার করা হয়েছে। এরকম একটি অবস্থায় মানুষ মনে করেছে, যখন সেনাবাহিনী নামবে তখন হয়তো পুলিশ এবং সিভিল প্রশাসনের নির্লজ্জভাবে সরকারি বাহিনীর মতো কাজ কিছুটা সংযত হবে। মানুষের এ আকাঙ্খাকে বা আশাকে ভেঙ্গে দেয়ার জন্য সেদিনই সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে বেশি আক্রমণটা হলো। যেনো সরকারি দল ম্যাসেজ দিতে চাইলো, তোমরা যারা সেনাবাহিনীর উপর ভরসা করছো, সে সেনাবাহিনীর উপর ভরসা করার কারণ নেই।
নুরুল কবির আরো বলেন, নির্বাচনী ভায়োলেন্স কমবেশি অতীতেও হয়েছে। এই প্রথম অপোজিশন দলের ক্যান্ডিডেট ১৫/১৬ জন এখনো গ্রেফতার আছেন। আরো ১০/১৫ জনের মতো ক্যান্ডিডেট প্রতিপক্ষের আক্রমণে আহত হয়ে আছেন। ক্যান্ডিডেট এর উপর একধরণের সমীহ বা চক্ষুলজ্জা আগে যেটি কাজ করতো, এবার সেটিও রহিত হলো।
নিউ এজ সম্পাদক বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হতে পারে না সেটি একেবারে চূড়ান্ত হলো। তত্ত্বাবধায়াক সরকারের জন্য একসময়ের আওয়ামী লীগের কঠোর আন্দোলন নিজেরাই বাতিল করলো। আজকে তারা বারবার বলতে থাকলো যে, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এই নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশে অনেকদিন থেকে যাবে।
বিএ-২০/২৮-১২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)