এবার ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমা

তাবলীগের দুই পক্ষের বিপরীত মুখী দৃঢ় অবস্থান ও উত্তেজনার কারণে জানুয়ারি মাসে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের (বেফাক) মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস। তিনি জানান, ফেব্রুয়ারিতে সুবিধাজনক সময়ে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।

তাবলিগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাবলীগের দুইপক্ষের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। সুষ্ঠুভাবে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের লক্ষ্যে তাবলিগের মুরব্বীদের বৈঠকে ঢাকা হলেও একসঙ্গে উভয়পক্ষকে বসানো সম্ভব হয়নি।

হেফাজতপন্থী মাওলানা জুবায়ের ও তার সমর্থকরা মাওলানা সা’দের অনুসারীদের সঙ্গে বসতে আপত্তি জানান। তাই আলাদাভাবেই বৈঠক করতে হয়।

তাবলিগ জামাত সূত্রে জানা গেছে,মাওলানা সা’দ বিষয়ে দারুল উলুম দেওবন্দের মতামত জানতে আগামী ১৫ জানুয়ারি উভয়পক্ষের মুরব্বী ও আলেমদের একটি প্রতিনিধিদল ভারত যাবে। দেওবন্দ থেকে ওই প্রতিনিধি দল আসার পর ফেব্রুয়ারির সুবিধামতো সময়ে ইজতেমার তারিখ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক)-এর মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস বলেন, জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমা হচ্ছে না। তবে বিশ্ব ইজতেমা এ বছর হবেই।

বৈঠকে চারটি সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা যায়,

# জানুয়ারিতে কোনও পক্ষের কোনও ইজতেমা হবে না।

# ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল দেওবন্দ গিয়ে রিপোর্ট নিয়ে আসার পর ইজতেমার তারিখ নির্ধারিত হবে।

# কোনও মসজিদে তাবলিগের কাজে কেউ কোনও বাধা দিতে পারবে না।

# নতুন ইজতেমার তারিখ পর্যন্ত উভয় পক্ষ কোনও জোড়, ইজতেমা, সমাবেশ, পরামর্শ সভা, অথবা ওয়াজাহাতি জোড় করতে পারবে না।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের বিশ্ব ইজতেমার পর তাবলিগ জামাতের দুইপক্ষ আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করে।

একদিকে, ভারতের তাবলিগের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভি অনুসারীরা গত বছর বিশ্ব ইজতেমার পর ২০১৯ সালের বিশ্ব ইজতেমার জন্য ১১, ১২ ও ১৩ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেন।

অন্যদিকে, সাদবিরোধীরা ও হেফাজতপন্থী কওমি আলেমদের নিয়ে গত ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে জানুয়ারির ১৮, ১৯ ও ২০ ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করে। একই সঙ্গে দুই পক্ষই পৃথক তারিখে জেলাভিত্তিক জমায়েতের তারিখ নির্ধারণ করেছিল। আর এই জমায়েতকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

এই নিয়ে গত ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুইজন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়।

বিএ-০২/১১-০১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)