কেন কাদেরকে স্টেডিয়ামে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বললেন ফখরুল?

নির্বাচনে ‘প্রহসন’ ও ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে স্টেডিয়ামে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ফের বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলের অ্যাজেন্ডা থাকলেই তাঁরা সংলাপে যাবেন। তা না হলে যাবেন না।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন আহত যুবদল কর্মী ফয়সাল হোসেনকে দেখতে যান।

সোমবার দুপুরে সিলেটে হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজার জিয়ারত শেষে সংলাপের ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আবার সংলাপে অবশ্যই ‘নির্বাচন বাতিলের’ বিষয়টি অ্যাজেন্ডা হিসেবে থাকতে হবে। অ্যাজেন্ডা জানলে সংলাপে যাওয়ার বিষয়টি তাঁরা বিবেচনা করবেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত রোববার সংলাপের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছিল, তাদের আবার আমন্ত্রণ জানাবেন প্রধানমন্ত্রী।

সিলেটে এ সংলাপের ব্যাপারে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংলাপের অ্যাজেন্ডা তো আমরা জানি না। নিঃসন্দেহে যখন আমাদের অ্যাজেন্ডা জানাবেন, তখন আমরা সে বিষয়ে বিবেচনা করব।’

আজ সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন বাতিলের অ্যাজেন্ডা থাকলেই তাঁরা সংলাপে যাবেন। না হলে যাবেন না। এটা ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির সিদ্ধান্ত। নির্বাচনে ‘প্রহসন’ ও ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে স্টেডিয়ামে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, গোটা বাংলাদেশকে আজ হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ দখলদারি সরকার। তারা জোর করে জনগণের সমস্ত আমানত লুণ্ঠন করেছে। প্রতিটি জেলা–উপজেলায় বিরোধী মতবাদের ওপর হামলা করছে। তারাই ফয়সালকে ছুরিকাঘাত করেছে। উন্নত চিকিৎসা না করা হলে ফয়সাল ভালো হবেন না।

বিএনপির মহাসচিব দাবি করেন, আওয়ামী লীগের হামলার বিষয়গুলো জাতির সামনে উঠে আসছে। তবে তাদের (আওয়ামী লীগ) লজ্জা–শরম বলতে কিছু নেই। তারা মহাবিজয়ের কথা বলছে। অথচ মহাবিজয়ে সারা দেশের মানুষের মুখে কোনো হাসি নেই।
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, স্বাধীনতাযুদ্ধ–পরবর্তী সময়েও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় বিরোধী দলের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছিল, হত্যা করেছিল। অথচ দলটি স্বাধীনতাযুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল।

হাসপাতালে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বিএনপি নেতা (একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর সদর আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন) অনিন্দ্য ইসলাম, বিএনপি–সমর্থিত ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) নেতা চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুবদল কর্মী ফয়সালের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অনিন্দ্য ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ফয়সালের একটাই অপরাধ ছিল, তিনি নির্বাচনের সময় বিএনপির পোস্টার লাগিয়েছিলেন। তাঁর ওপর হামলা করে দুই পায়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। ছুরির আঘাত মাংস ভেদ করে সাত-আট ইঞ্চি পর্যন্ত ক্ষত সৃষ্টি করে। তাঁর পা দুটো বাঁচানোই এখন মূল চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিএ-০৮/১৫-০১ (ন্যাশনাল ডেস্ক, তথ্যসূত্র: প্রথম আলো)