পান্তা ভাত, মরিচ পোড়া খেয়ে দিনভর রিলিফ দিতাম: প্রধানমন্ত্রী

১৯৯১ সালের ভয়াল ২৯ শে এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত জনজীবনের কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে উপকূলের মানুষের। সেই ভয়াল দিনগুলোর কথা এখনও অমলিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মৃতিতেও।

বুধবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সন্দ্বীপে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টার প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি ১৯৮৫ সালে সন্দ্বীপ এসেছিলেন।’

এ সময় স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি সন্দ্বীপ বেশ কয়েকবার গিয়েছি। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পরও গিয়েছিলাম। এখনও মনে আছে, ভোরে পান্তা ভাত, নারকেল কোরা আর পোড়া মরিচ খেয়ে বের হতাম। দিনভর চলত রিলিফের কাজ।’

তিনি আরও বলেন, ‘নারকেল কোরা কিন্তু খুব মজা। এখনও মনে আছে পোড়া মরিচ। ওখানে তখন কিছুই ছিল না। নোনা পানিতে ভরা…সব নষ্ট হয়ে গেছে।’

ভিডিও কনফারেন্সে সন্দ্বীপের এক শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ‘বিদ্যুতে আলো না থাকায় আগে তাদের পড়ালেখায় অসুবিধা হত। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যুৎ পেয়ে তারা অনেক রাত পর্যন্ত লেখাপড়া করতে পারে। স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস করা যাচ্ছে। আগে মূল ভূখণ্ডের শিক্ষার্থীদের থেকে সন্দ্বীপের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে ছিল। কিন্তু এখন বিদ্যুৎ পাওয়ায় তাদের আর পড়ালেখায় পিছিয়ে থাকতে হবে না।’

প্রধানমন্ত্রী ওই শিক্ষার্থীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। পরে তিনি সন্দ্বীপের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘মিতা কই.. ? সন্দ্বীপে তো স্কুল আছে, কলেজ আছে। আপনারা চাইলেত সন্দ্বীপে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। কি বলেন..?’

উত্তরে সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ প্রধানমন্ত্রী চাইলে তা অবশ্যই হবে।’

এর আগে বেলা ১০টা ৫১ মিনিটে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ছয়টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও ১২টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভিডিও কনফারেন্সে সন্দ্বীপের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা ভূ-খণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সন্দ্বীপকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড-মিরসরায়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করতে একটি ব্রিজ নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভোলা থেকে বরিশাল যদি ব্রিজ হতে পারে তবে সীতাকুণ্ড-মিরসরায়ের সঙ্গে সন্দ্বীপের একটি ব্রিজ হওয়া সম্ভব। আমরা একটি ব্রিজ চাই।’

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্দ্বীপেও ব্রিজ হবে। তবে সে পর্যন্ত ব্রিজ করার জন্য ভিজিবিলিটি টেস্ট করতে হবে। কোন জায়গা দিয়ে কাছে হবে, সাগরের তলদেশের কি অবস্থা, জানতে হবে। ভিজিবিলিটি টেস্ট শেষ করা গেলে আমরা এ বিষয়ে বলতে পারেব।’

বিএ-১৮/০৬-০২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)