বিদ্যুৎ খাতে বাড়ছে বকেয়া ও লোকসান

২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সরকারি, আধাসরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রাইভেট পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠনে বিদ্যুৎ খাতে বকেয়া বিলের পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা।

সোমবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এই তথ্য জানান।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নভেম্বর ২০১৭ সাল পর্যন্ত বকেয়া বিলের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। আর ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বকেয়া বিলের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা।

জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি বকেয়া আছে প্রাইভেটে, যার পরিমাণ ৫ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। এরপর সর্বোচ্চ বকেয়া আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে, ৭৬৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এছাড়া ৬৪২ কোটি ৯৮ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে।

বকেয়া আদায়ে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জাতীয় সংসদকে জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বকেয়া বিল আদায়ে টাস্কফোর্স গঠন করে ঝটিকা অভিযান চালানো হচ্ছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এর বাইরে সরকারি প্রতিষ্ঠানের বকেয়া আদায়ের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগ থেকে বিদ্যুৎ বিল খাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিতকরণের ওপর জোর দেন তিনি। পাশাপাশি সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বকেয়া আদায়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।

বকেয়া বিলের সঙ্গে সঙ্গে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিক্রি করায় লোকসানও বাড়ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত গত ১০ বছরে বিপিডিবির লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। সর্বশেষ গত অর্থবছরও প্রতিষ্ঠানটির লোকসান হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। তার আগের অর্থবছর এর পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৪৩৪ কোটি। এছাড়া ২০১৫-১৬ অর্থবছর ৩ হাজার ৮৬৬ কোটি ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরেও ৭ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা লোকসান করেছিল বিপিডিবি।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে উৎপাদনে আছে মোট ১২৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর মধ্যে বিপিডিবির নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ৪১। বাকি ৮২টি রেন্টাল, কুইক রেন্টাল, আইপিপি ও স্মল ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (এসআইপিপি), যেগুলো থেকে বিদ্যুৎ কিনছে বিপিডিবি। এর মধ্যে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল ২৭টি এবং আইপিপি ও এসআইপিপি ৪৬টি। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫৪টিই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে ফার্নেস অয়েল ও ডিজেল, যা সবচেয়ে ব্যয়বহুল।

বিএ-১৬/১২-০২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)