২৮ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত

দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের চলমান সব কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।

মেয়রের সঙ্গে এক বৈঠকের পর বুধবার বিকেলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী ফয়সাল এনায়েত এক ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানান।

তিনি বলেন, আগামী ২৮ মার্চ বেলা ১১টায় আমরা আবার মেয়রের কার্যালয়ে বৈঠকে বসব। সেখানে দাবি পূরণের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে। অগ্রগতি দেখ যদি আমরা সন্তুষ্ট না হই, তাহলে আবার বিক্ষোভ শুরু হবে।

ফযসাল জানান, ওইদিন আবার আন্দোলন শুরু হলে দেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলবে না। সারা দেশের সকল শিক্ষার্থী তাতে অংশ নেবে। অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

বিইউপির আরেক শিক্ষার্থী তৌহিদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত সব ধরনের আন্দোলন আমরা স্থগিত করছি। ছাত্রদের সঙ্গে মেয়রের দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়েছে। সময় সাপেক্ষে মেয়র সাহেব আমাদের সব দাবি মেনে নিয়েছেন।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকার নর্দ্দা এলাকার প্রগতি সরণির যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের রাস্তা পার হওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ।

রাস্তার উল্টো পাশে ছিল আবরারের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস। জেব্রা ক্রসিং পার হয়ে সেই বাসের কাছে যাচ্ছিলেন তিনি। ঠিক তখন ওই রাস্তায় দুটি বাসের প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ে সুপ্রভাত পরিবহনের একটির ধাক্কায় ছিটকে পড়েন আবরার। এরপর সেই বাসটি তাকে চাপা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার নিথর দেহ টেনেও নিয়ে যায় খানিকটা। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আবরারের।

আবরার ছিলেন বিইউপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহমেদ চৌধুরী, গৃহিণী মা ফরিদা ফাতেমী ও একমাত্র ছোট ভাই আবিদ আহমেদ চৌধুরীকে নিয়ে থাকতেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসায়।

নির্মম দুর্ঘটনা সহপাঠী আর পথচারীদের সামনেই ঘটেছে। এরপর ফুঁসে ওঠেন তারা। বারিধারায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মূল গেট থেকে শুরু করে প্রগতি সরণি অবরোধ করে দিনভর চলে বিক্ষোভ। এতে আবরারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আইইউবিসহ আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তাদের সঙ্গে ‘সড়কে হত্যা’র প্রতিবাদে শামিল হন অভিভাবক থেকে শুরু করে স্থানীয় লোকজনও।

পরে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে পুলিশ, শিক্ষক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে অবরোধ তুলে নিয়ে বুধবার সকাল ৮টা থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আবারও রাস্তায় নামেন তারা।

মঙ্গলবার সুপ্রভাতের দুর্ঘটনা ঘটানো বাসটির রুট পারমিট সাময়িক বাতিল করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয় বাস চালক সিরাজুলকে। মঙ্গলবার রাতে নিহতের চাচা ওই ঘঠনায় বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। বুধবার দুপুরে সিরাজুলককে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

বিএ-১৩/২০-০১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)