মাহফুজ উল্লাহর মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলো যেভাবে

প্রিয় মাহফুজ উল্লাহ ভাইয়ের অবস্থা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এ বিভ্রান্তির জন্য মিডিয়াকে দুষছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি চরমে। প্রকৃতপক্ষে বিভ্রান্তি সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাই।

আমার সঙ্গে মাহফুজ উল্লাহ ভাইয়ের মেয়ে নুসরাত হুমায়রা ওরফে অঙ্গনার প্রথম কথা হয় বেলা ৩টায়। তিনি জানান সংকটাপন্ন মাহফুজ উল্লাহ ভাইকে আর কষ্ট না দিতে পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে তাঁর হৃদস্পন্দন থাকায় চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে আরও কিছু সময় নিতে চান তারা।

বেলা পৌনে ৪টায় দ্বিতীয় দফা কথা হলে তিনি বলেন, বাবা আর নেই। বেলা ৩টা ২০ মিনিট থেকে তাঁর হৃদ স্পন্দন পাওয়া যাচ্ছে না। অতএব আমরা ধরে নিয়েছি তিনি আর নেই।

তৃতীয় দফায় কথা হয় সাড়ে ৫টার দিকে। বিভ্রান্তির বিষয়ে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, বিভ্রান্তির কিছু নেই। বাবা বেঁচে নেই। তবে তাকে মশ্চুয়ারিতে যাতে না নেওয়া হয় সে জন্য কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র আবার সীমিত আকারে লাগিয়ে রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আপনারা বলতে পারেন ক্লিনিক্যালি ডেড।

এখন দেখা যাচ্ছে তিনি একটি স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন তিনি এখন ডীপ কোমায় আছেন। তবে তিনি স্ট্যাটাসে ‘স্টিল এলাইভ’ শব্দ ব্যবহার করায় কিছুটা বিভ্রান্তির অবকাশ দেখা দিয়েছে।

রাত সাড়ে ৮টায় কথা হয় মাহফুজ ভাইরে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফজলুল আহসানে সঙ্গে। তিনি যা জানালে তা অত্যন্ত দু:খজনক। তাঁর ভাষ্যমতে- ডীপ কোমায় চলে যাওয়ায় দুপুরে পরিবারের সদস্যরা সিদ্ধান্ত দেন যে তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হোক। এটা চিকিৎসকদের জানিয়ে স্ত্রী ও কন্যা ধরে নিয়েছেন তা খুলে নেওয়া হয়েছে এবং তিনি নেই। ফলে তারা মিডিয়াকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। কিন্তু বামরুনগ্রাদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যতক্ষণ স্পন্দন আছে ততক্ষণ লাইফ সাপোর্ট খুলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাদের নীতি অনুযায়ী স্পন্দন পুরোপুরি না থামা পর্যন্ত লাইফ সাপোর্ট থাকবে। ফলে মৃত ঘোষণার সুযোগ নেই।

এ প্রেক্ষিত সন্ধ্যায় মেয়ে অঙ্গনা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এখনও তাঁর হৃদস্পন্দন আছে বলে জানিয়েছেন ফজলুল আহসান। তিনি লাইভ ভিডিওতে তা দেখেছেন বলে জানান। ফজলুল আহসান দেশে মাহফুজ ভাইর চিকিৎসা তদারকির দায়িত্ব পালন করেন।

বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ চায় মাহফুজ উল্লাহ ভাই ফিরে আসুন। তাঁর মতো মেধাবী, চৌকস সাংবাদিক, লেখক, রাজনৈতিক ভাষ্যকার অসময়ে চলে যাবেন তা কেউ মেনে নিতে পারছে না। মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মৃত্যু সংবাদকে মিথ্যা প্রমান করে মাহফুজ ভাই ফিরে আসলে তাঁর অগনিত ভক্ত-অনুরাগী খুশি হবেন। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা অলৌকিকভাবে হলেও তাঁকে ফিরিয়ে দিন।

বিএ-২২/২২-০৪ (ন্যাশনাল ডেস্ক,লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন)